অপরাধ সারাদেশে

পুঠিয়ায় পুত্রবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার সালিশে ৪ কাঠা জমি ও সমাজকে ২০ হাজারে ফায়সালা

রাজশাহী (পুঠিয়া) প্রতিনিধি: মো:মিজানুর রহমান  রাজশাহীর পুঠিয়ায় নিজের ছেলের বৌকে অসংখ্যবার ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক শ্বশুরের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শশুরের নাম আব্দুস সালাম (৪৫)। সে পুঠিয়া উপজেলার ভালুকগাছি ইউনিয়নের চক দুর্লভপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা। সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, একই উপজেলার জামিরা গ্রামের জনৈক ব্যক্তির হাফেজা মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়, আব্দুস সালামের ছেলে পলাশের। বিয়ের দেড় মাস পর থেকে গুঞ্জন ওঠে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার। স্বামীর সংসার টিকিয়ে রাখতে ও শশুরের কুপ্রভাব হতে রেহাই পেতে ওই গৃহবধূ তার স্বামী ও শাশুড়িকে জানিয়েও কোনো সমাধান পায়নি। পরে এমাসের ৪ তারিখ শুক্রবারের ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীকে নিয়ে মায়ের বাড়ি চলে যান। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিষয়ে স্থানীয় সমাজ প্রধান ফজলুর রহমান বলেন, সালাম তার ছেলের বৌকে নানান সময়ে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করছে বলে শোনা যাচ্ছে। আজ রোববার ৬ এপ্রিল সন্ধ্যার পরে বিষয়টি মিমাংসার জন্য বসার কথা রয়েছে। এসব বিষয়ে জানতে সরেজমিনে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিয়ের দেড় মাস পর থেকে সে আমাকে মারিফত শেখাতে চায়। তারপর আমার স্বামী যেভাবে আমার সাথে দৈহিক মিলন করে সেভাবে দৈহিক মিলন করার অফার দিতে থাকে। আমি বহুবার নিষেধ করার পরেও আমাকে বারবার বলতো। তারপর বিভিন্ন সময় ঘরের দরজা খোলা থাকলে আমার ঘরের ভেতর ঢুকে দরজা আটকিয়ে দিয়ে আমার সাথে অশালীন আচরণ শুরু করে। এভাবে বেশ কয়েকবার আমার ঘরে ঢুকেছে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গা হাত দিতে মুখ চেপে ধরত এমন কি আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিত। এছাড়াও গত কয়েকদিন আগে আমার ঘরের দরজা বন্ধ থাকায়, অন্য ঘরের সিলিং এর উপর দিয়ে পার হয়ে এসে আমার ঘরে ঢুকে পড়ে। আমার স্বামী সে সময় অন্য এলাকায় গানের অনুষ্ঠানে গান শুনতে গিয়েছিল। এসময় ঘরে ঢুকে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয়। এমনকি আমাকে বলে সে নাকি মেরে ফেলবে এভাবে আমার মুখ চেপে ধরেছিল। এসব ঘটনা আমার শাশুড়ি ও স্বামীকে বলেছি কোন সূরাহা পাইনি। উল্টো আমার শাশুড়ি আমাকে বলতো তুমি যদি ভালো মেয়ে হও তাহলে তোমার কাছে কেন যাবে। এসব বিষয়ে ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর স্বামী তিনি জানান, এই ঘটনাগুলো আমার চাচাতো ভাই একজন আর্মিতে চাকরি করে তাকে জানিয়েছি। এছাড়াও আরো অনেককে জানিয়েছি বিষয়টি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য। আজকে সন্ধ্যার পর একটা শালিশ বসার কথা আছে। ভুক্তভোগীর মা ও বাবা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে কূপস্তাদ দিত তার শশুর। থানায় গিয়ে কোন সহযোগিতা পাইনি। ওই বাড়িতে আমার মেয়ে নিরাপদ নয়।   জানতে চাইলে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কবির হোসেন বলেন, ওই গৃহবধূর একটি পারিবারিক কলেজের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য যে, ওই ঘটনাটি রাতারাতি মাতাব্বররা সালিশের মাধ্যমে ফয়সালা করে ধামাচাপ দেয়। সালিশে রায় দেওয়া হয় ৪ কাঠা জমি ওই ভুক্তভোগীকে গৃহবধূকে লিখে দিয়ে আলাদা জায়গায় বাড়ি করে দিতে হবে। এছাড়াও  সমাজকে ২০ হাজার টাকা নগদ অর্থদণ্ড দিতে হবে বলে উপস্থিত সালিশদাররা ওই ফায়সালা দেয়।

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *