মোঃ মজিবর রহমান শেখ,, ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের মুসলিম নগর এলাকায় মোঃ জহিরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসীর বাড়িঘর পুলিশের উপস্থিতিতে ভেঙ্গে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা এমন অভিযোগ করেছেন তিনি । বর্তমানে সেই প্রবাসী মানবেতার জীবন-যাপন করছেন । প্রানের ভয়ে পরিবার নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রবাসী । সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রায় ২৫–৩০ জন দুর্বৃত্তরা ঐ প্রবাসীর বাড়িঘর পুলিশের উপস্থিতিতে ভাঙচুর চালায় ও মালামাল নিয়ে যায় , এমন ভিডিও পাওয়া যায়। ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার এ বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন প্রবাসীকে। মোঃ জহিরুল ইসলাম ভিসার কাজে ১৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার ঢাকায় অবস্থান করছিল। জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রবাসী মোঃ জহির খান স্থানীয় মোঃ শহিদুল ইসলামের কাছে ৬ শতক জমি ক্রয় করেন । প্রবাসী মোঃ জহির খান গ্রীস থেকে গত কয়েকদিন আগে ৩ মাসের ছুটিতে এসে বাড়ির কাজ শুরু করেন । কিন্তু হঠাৎ জমির মালিক দাবি করে বসে আনোয়ারা পারভিন নামে এক নারী। তিনি সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার লোকজন, দুইজন পুলিশ ও ২৫–৩০ জন দুর্বৃত্তকে সঙ্গে নিয়ে ঐ প্রবাসী নির্মাণধীন বাড়ির সীমানা প্রাচীর, ৪টি আরসিসি পিলারের মধ্যে দুটি পিলার ভেঙ্গে ফেলে আর বাকি দুটি ভাঙতে ব্যর্থ হন এবং বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন । প্রত্যক্ষদর্শী মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, জোহার স্ত্রী আনোয়ারা একদল সন্ত্রাসী নিয়ে এসে প্রবাসী জহিরের বাড়িঘর ভাঙতে শুরু করেন। এ সময় বাড়ির মহিলারা বাধা দিলে পুলিশের সামনেই মহিলাদের চুলের মুঠি ধরে ধাক্কায় ফেলেন দেন তারা। আমরা কয়েকজন এগিয়ে গেলে রাম দা, চাইনিস কুড়াল নিয়ে আমাদের দিকে সন্ত্রাসীরা তেরে আছেন। এই দেশে কি আইন নেই। জমি নিয়ে সমস্যা থাকলে সেটা আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। এভাবে কারো অনুপস্থিতিতে তার বাড়ি ভাঙ্গচুর করা কি ঠিক। আরেক প্রতিবেশী ইউসুফ রানা বলেন, প্রবাসী জহির ভিসার কাজে ঢাকায় ছিলেন এই সুযোগে ঐ মহিলা (আনোয়ারা) দেশীয় অস্ত্রসহ প্রায় ২৫–৩০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে এসে বাড়ি ঘর ভাঙতে শুরু করেন। আমরা ভাঙ্গার কারন জানতে চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। আইনের লোকদের সামনেই যদি সন্ত্রাসীরা দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে দিন দুপুরের হামলা চালায় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষ কার কাছে গিয়ে আশ্রয় নিবো। এ বিষয়ে প্রবাসী জহির খান বলেন, আমি একজন প্রবাসী ২২ বছর ধরে গ্রীসে থাকি। ৭ বছর আগে জমিটা ক্রয় করে বাড়ি করে বসবাস করছি। আমি ঢাকায় ভিসার কাজ শেষে বাসায় এসে দেখী সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়েছে। ২২ বছরের পরিশ্রমের টাকায় আমি বাড়িটা করেছি। পুলিশ প্রশাসনকে ফোন করেছি তারা আসেননি। দুই দিন ধরে স্ত্রী ও ৭ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য থানায় ঘুরা ঘুরি করছি কিন্তু পুলিশ কোন কথা শুনছে না। মামলা দিতে গেলে মামলাও নিচ্ছে না। বরং পরামর্শ দিচ্ছেন কোর্টে মামলা করতে। তিনি আরো জানান, ২২ বছর ধরে সরকারকে আমি রেমিটেন্স দিচ্ছি। আমি কি ন্যায় বিচার পাবো না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমি একজন প্রবাসী, রেমিটেন্স যোদ্ধা। আমার প্রতি একটু সদয় হোন। অভিযোগ প্রসঙ্গে আনোয়ারা পারভিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ জায়গাটা আমার স্বামীর। সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার কাছে লোন এর জন্য বন্ধক রয়েছে। প্রবাসী জহির বাড়ির কাজ শুরু করলে আমি ব্যাংক ম্যানেজারকে বিষয়টি অবগত করি। ম্যানেজার তখন ওসিকে ফোন করেন। পরে পুলিশ ও ব্যাংকের লোকদের সামনেই বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও পিলার গুলো ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভিরুল ইসলাম জানান, মুসলিম নগরে একটি জমি সংক্রান্ত ঝামেলা হওয়ার বিষয়ে ৯৯৯ লাইনে ফোন পাওয়ার সাথে সাথে আমার অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। পরে জানতে পারি মরগেজ সম্পত্তি ব্যাংক কর্তৃক জায়গাটা দখলে নিয়েছে। পরে আমার অফিসার কাগজপত্র সংগ্রহ করে ডায়রিতে নোট করেছে। এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংক ঠাকুরগাঁও শাখার ম্যানেজার নিরঞ্জন চন্দ্র রায়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজী হননি।