তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গত ১৩ বছরে বাংলাদেশে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা প্রায় তিনগুণ বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে সাড়ে প্রায় চারগুণ। পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে ভারতে, ইউরোপে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক বছরে সমস্ত ভোগ্যপণ্যের দাম যেভাবে বেড়েছে, বাংলাদেশে মূল্যবৃদ্ধি সেই তুলনায় অনেক কম। বৃহস্পতিবার ৩ মার্চ দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহ্যবাহী জাতীয় শিশু-কিশোর ও যুবকল্যাণ সংগঠন ‘চাঁদের হাট’ আয়োজিত রফিকুল হক দাদুভাই স্মৃতি পদক প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীতে সবসময় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে, কখনো কমেনি। যখন বাংলায় দুর্ভিক্ষ হয়, তখন এক আনা অর্থাৎ ১৬ পয়সায় কয়েক কেজি চাল পাওয়া যেতো, কিন্তু বংলায় দুর্ভিক্ষ হয়েছে। অর্থাৎ দেখতে হবে, দ্রব্যমূল্যের সাথে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কি না। গত ১৩ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় সাড়ে চারগুণ আর নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, মধ্যম আয়ের মানুষেরও ক্রয়ক্ষমতা তার কাছাকাছি রয়েছে।’ ‘বাংলাদেশে আগে দাবি-দাওয়া হতো একজন শ্রমিকের মজুরি হতে হবে সাড়ে তিন কেজি চালের মূল্যের সমান, আর এখন একজন শ্রমিক কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ কেজির চালের মূল্যের সমান মজুরি পায়, যার অর্থ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে’ উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ। সাংবাদিকরা এসময় বিএনপি’র সমাবেশে পুলিশের বাধা নিয়ে বিএনপি’র অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেব কিংবা তাদের অন্যান্য নেতারা যারা এ বিষয়ে কথা বলছেন তাদের অনুরোধ জানাবো যে সরকারের দিকে আঙ্গুল না তুলে নিজেদের মারামারিটা বন্ধ করার জন্য।’ সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বেগম জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করেছে খুব নির্বিঘ্নে, কোনো কোনো জায়গায় তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে। কয়েকদিন আগে ঘোষিত কর্মসূচিও তারা পালন করেছে। কোনো জায়গাতেই তাদের কোনো অসুবিধা হয়নি। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুক, তাদের কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ থাকলে করুক সেটি আমরা চাই, গণতান্ত্রিক সমাজে এর প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সমাবেশ করতে গিয়ে যদি জনজীবনে বিপত্তি ঘটায়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কিংবা বিশৃঙ্খলার পাঁয়তারা করে, নিজেরা মারামারি করে, যেগুলো বিএনপি সবসময় করে এসেছে, তখন সেগুলো ঠেকানোর জন্য পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হয়।’ এর আগে দাদুভাই স্মৃতি পদক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘চাঁদের হাট’ প্রতিষ্ঠাতা রফিকুল হক দাদু ভাইয়ের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মানবিক গুনাবলী বিকাশে চাঁদের হাটের মতো সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। চাঁদের হাট এমন একটি সংগঠন যেটি বাংলাদেশে প্রচুর গুণীজনের জন্ম দিয়েছে এবং শিশু-কিশোরদের মেধা ও মনন বিকাশে, তাদেরকে সাহিত্যমন্য করতে চাঁদের হাট কয়েক দশক ধরে যে ভূমিকা রেখেছে তা সত্যিই অতুলনীয়। চাঁদের হাটের সভাপতি ইয়াহিয়া সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সাংবাদিকতায় দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, সংগীত রচনায় মো: মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী, ছড়া-সাহিত্যে ফারুক হোসেন ও বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ মো: জাকারিয়া পিন্টুর হাতে আজীবন সম্মননা পদক তুলে দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। পদকপ্রাপ্ত গুণীজন, সংগঠনের সহ-সভাপতি ও পদক প্রদান আয়োজন সমন্বয়ক মুফদি আহমেদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য জামিউর রহমান লেমন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।