ভোলায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে ছাত্র- শিক্ষক, গণমাধ্যমকর্মী, ও সুশীল সমাজের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনা
মোঃ আবদুর রহমান (হেলাল), ভোলা প্রতিনিধি ॥
ভোলায় উগ্রবাদ প্রতিরোধে ছাত্র, শিক্ষক ,গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের ভূমিকা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (০৯ মার্চ) জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে ভোলা জেলা পুলিশের আয়োজনে দিনব্যাপী কর্মশালায় ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু।
বাংলাদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় দিনব্যাপী এ কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রী, গণমাধ্যমকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় ঘন্টাব্যাপী প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার খন্দকার রবিউল আরাফাত লেলিন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু বলেন, বর্তমানে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ এর পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম এর স্বীকার হচ্ছেন তরুন-তরুনীরা। তাই সাইক্রাম বন্ধ কিংবা নিয়ন্ত্রন করতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। মোবাইল আসক্ত বন্ধ করতে হবে। মোবাইলের মাধ্যমে ফেইসবুক ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খারাপ কাজে ধাবিত হচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে অভিভাবকদের আরো সচেষ্ট থাকতে হবে।
এসময় পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। এখানে সামাজিকভাবে জঙ্গিবাদ ও উগ্রতাকে সামাজিকভাবে উৎসাহী করা হয় না। তাই কিশোর ও তরুণীদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেন তারা উগ্রবাদের দিকে না যায়। পাশাপাশি প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে সমাজে শান্তি আসবে বলেও বক্তারা উল্লেখ্য করেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ইসলাম প্রধান দেশ, ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। জঙ্গিবাদ ও ইসলামকে কেউ একসাথে মিলিয়ে ফেলবেন না। এদেশে শাসন ব্যবস্থা ও জনগণ জঙ্গিবাদকে আশ্রয় ও প্রশয়ও দেয় না। দেশের যে কোন ক্রান্তিকালে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ ও ছাত্র সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনসহ দেশের স্বাধীনতা অর্জনেও তাঁদের রয়েছে উল্লেখ্য যোগ্য ভূমিকা ও দৃপ্ত পদচারণা। তাই সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, উগ্রবাদ ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে ছেলে-মেয়ের গতিবিধি ও ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত অভিভাবকদের। এলাকাবাসীকে এলাকায় নতুন কোন অপরিচিত ব্যক্তি দেখা গেলে তার পরিচয় সম্পর্কে অবগত হওয়া জন্য অনুরোধ করেন। একই সাথে সঠিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান, ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা,জেলার কোথাও কোন জঙ্গীবাদ বা উগ্রবাদ জাতীয়কোন বিষয় সম্পর্কে অবগত হলে সঙ্গে সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনকে অবহিত করার আহব্বান জানানো হয়।
তালহা তালুকদার বাধন এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভোলা সদর সার্কেল) ফরহাদ সরকার, জেলা শিক্ষা গবেষণা কর্মকর্তা মুহাম্মদ নুরে আলম সিদ্দিকী, দৈনিক আজকের ভোলা পএিকার সম্পাদক মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম নিরব মোল্লা, ভোলা প্রেস ক্লাব সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু, আব্দুর রব স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ শাফিয়া খাতুন, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সালাউদ্দিন প্রমুখ।
জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ এবং সমাজের সুশীল সমাজের একাংশ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
—–