পরিবেশ বান্ধব বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে আর্থিক সহয়তা দিয়ে যাচ্ছে, ইডকল
স্টাফ রিপোর্টারঃ খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় সাহস ইউনিয়নের নওয়াকাঠি গ্রামে সম্প্রতি ইডকল এর সহায়তায় বাস্তবায়িত বায়োগ্যাস প্রকল্প পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জার্মান ডেলিগেশন টিমের প্রতিনিধি জার্মান সরকার, জার্মান এম্বাসি, কেএফডব্লিউ, জিআইজেড ও ইডকল এবং সহোযোগি সংস্থার প্রতিনিধি গন।
পরিদর্শনকালে জনাব শিবলী মোহাম্মদ ফয়েজ,ইউনিট প্রধান, বায়োগ্যাস ও জৈব সার প্রকল্প,ইডকল। তার বক্তব্যে বলেন যে, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) শতভাগ সরকার মালিকানাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে। ইডকল নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেক্টরে মার্কেট লিডার হিসেবে অর্থায়ন করছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে যাত্রা শুরু করে। ইডকল ২০০৬ ইং খৃষ্টাব্দ হইতে সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে “বায়োগ্যাস ও জৈব-সার প্রোগ্রাম” বাস্তবায়ন করে আসছে। প্রাথমিকভাবে, এসএনভি- নেদারল্যান্ডস এবং কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জার্মানির সহায়তায় ‘ন্যাশনাল ডোমেস্টিক বায়োগ্যাস অ্যান্ড ম্যানুর প্রোগ্রাম (এনডিবিএমপি)’নামে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক-ও এই কর্মসূচিতে সহায়তার জন্য যোগ দেয়। ২০২২ইং সালের জানুয়ারী পর্যন্ত এই কর্মসূচির অধীনে ৬১,৭০০ টিরও বেশি বায়োগ্যাস প্লান্ট নির্মাণ করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, জার্মান সহায়তায় ইতিমধ্যেই ৩৮,৬১৫ টি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে যা মোট বাস্তবায়নের প্রায় ৬৩%। ইডকল আরও আট হাজার বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য সহায়তার বিষয়ে কে এফ ডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এর সাথে আলোচনা করছে।
বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের দ্বিগুণ সুবিধা রয়েছে: পরিষ্কার রান্নার জ্বালানী উৎপাদন ও জৈব-স্লারি যা উন্নতমানের জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা যায়। উপরন্তু, একটি মাঝারি আকারের বায়োগ্যাস প্লান্ট (২.৪ m3 গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা) ৩.৮৩ tCO2/বার্ষিক সাশ্রয় করতে পারে।
গরু ও হাঁস-মুরগির প্রাপ্যতা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ১০ লাখ বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার গত আগস্ট ২০২১ এ ন্যাশনাললি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (NDC) প্রতিবেদন অনুযায়ী এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা সাপেক্ষে আগামী ১০ বছরে সারা দেশে ১০৭,০০০ টি বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
বায়োগ্যাস প্রকল্প বাস্তবায়নে ইডকল এর তালিকাভুক্ত সহোযোগী সংস্থার নির্ধারিত প্রকল্প এলাকায় সম্ভাব্য গ্রাহকদের চিহ্নিত করে, মাইক্রো-ফাইনান্স/নগদ অর্থ গ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন যা অনুমোদিত সরবরাহকারীদের কাছ থেকে যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে, প্ল্যান্ট তৈরি করে এবং রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান নিশ্চিত করে থাকে । যার ফলে সুবিধাভোগীদের বায়োগ্যাস প্লান্টের মালিকানা পেতে বেগ পেতে হচ্ছেনা । বাংলাদেশে মোট স্থাপিত ৮৮,০০০ গার্হস্থ্য বায়োগ্যাস প্লান্টের মধ্যে ৭০% ইডকলের অর্থায়নে স্থাপিত হয়েছে।
বায়োগ্যাস প্লান্ট বাস্তবায়নকারি সংস্থার পরিচালক মো.নজরুল ইসলাম, আইডিয়াল। তার সাথে আলাপকালে জানান যে, ইডকল এর সহযোগি সংস্থা হিসেবে এই ধরনের পরিবেশ উন্নয়ন মুলক কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। তিনি বলেন যে, ‘বায়োগ্যাসের সুবিধা কত, গ্রামে থেকে শহরের মতো। বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে গ্রীন হাউজ গ্যাসের স্তর ক্ষয় কম হবে।
বায়োগ্যাসে রান্না হয়, স্বাস্থ্যসম্মত। বায়োগ্যাসের স্যালারিতে হয় মাছের খাবার ও জৈব সার। আর বায়োগ্যাস বেশি হলে ভাড়াও দেয়া যায়। এতসব গুণের কারণে বায়োগ্যাস ব্যবহার দক্ষিণাঞ্চলে ক্রমশ বাড়ছে। বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনে আগ্রহী খামারিদের আহ্বান জানান।
২.৪ ঘন মিটার প্লান্টের মালিক জনাব নজরুল ইসলাম, ডুমুরিয়া, খুলনা, এর সাথে কথা বলে জানা যায় যে, ইডকলের সহযোগিতায় নির্মিত বায়ো গ্যাস প্লান্ট থেকে উৎপাদিত জৈব সার তার নিজের প্রোয়জনীয় ফসলী জমিতে অর্গানিক ফসল উৎপাদন এর পাশাপাশি বাড়তি জৈব সার বিক্রি করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন।