রেজওয়ানুল ইসলাম রনি,স্টাফ রিপোর্টার: কামারখন্দ উপজেলা যুব কল্যাণ পরিষদ, ঢাকার উদ্যোগে মহান স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়, রাজধানী ঢাকার মিরপুর – ২ এর সিরাজগঞ্জ ভবনে। সংগঠনের আহবায়ক ও চ্যানেল আই টিভির সাবেক লন্ডন প্রতিনিধি এম.এ. আর. মুরাদের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের যুগ্ম- আহবায়ক ইঞ্জি. সালাহউদ্দিন চৌধুরী ও সদস্য-সচিব ইঞ্জি. মোস্তাকিন মোহাম্মদ সামিউ’র যৌথ সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিরাজগঞ্জ – ২ (সদর – কামারখন্দ) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য খ্যাতিমান চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্না।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতি ঢাকার চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এস.আর তালুকদার, সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতির মহা-সচিব ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ মনিরুজ্জামান, কামারখন্দ উপজেলা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি – সাবেক অতিরিক্ত সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান, সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতির সিনিয়র সহ. সভাপতি সাবেক উপ-বন প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী কবির হায়দার, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট জুলফিকার আজাদ, সুইড বাংলাদেশের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য ইমেলদা হোসেন দীপা, কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব মো: সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতির বিভাগীয় সচিব ও সুনামধন্য শ্রমিক নেতা সিরাজুল ইসলাম রনি, বিভাগীয় সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম বাঁশি, কার্যকরী সদস্য নাসির উদ্দিন বাদল, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ধর্ম উপ-কমিটির সদস্য – সাবেক ছাত্রনেতা আল মাসুদ হাসান সাজু, রাজনীতিবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতা রমিজ উদ্দিন রতন, শিল্পপতি ফয়সাল আহমদ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম শফি, মোরশেদ আহম্মদ টুটুল সহ অন্যরা।
প্রধান অতিথির ভাষণে সাংসদ অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, দল মতের উর্ধ্বে থেকে কামারখন্দ উপজেলা যুব কল্যাণ পরিষদকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান। যুবকরাই শক্তি উল্লেখ করে কামারখন্দের উন্নয়নে তার বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন, সেখানেও যুবকদের ভূমিকা ছিল বলে তিনি আলোকপাত করেন। এছাড়া যুবকদের আরো অংশগ্রহণ বাড়লে ডিজিটাল বাংলাদেশের পাশাপাশি ডিজিটাল কামারখন্দ গড়া সম্ভব হবে বলে উল্লখ করেন। রাজধানী ঢাকার বুকে কামারখন্দের যুবকদের এ সংগঠন এগিয়ে যাবে এবং এলাকার স্বার্থ সংস্লিস্ট বিষয়ে তাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা থাকবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভবিষ্যতে কামারখন্দ উপজেলা যুব কল্যাণ পরিষদের যে কোন জনকল্যাণ মূলক কাজে সব ধরণের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন তিনি। অতিথির বক্তব্যে সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতি, ঢাকার চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এস.আর তালুকদার, কামারখন্দ উপজেলা যুব পরিষদের উত্তরত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বলেন, এই যুবকরাই আগামী দিনের কামারখন্দ গঠনে ভুমিকা রাখবে। এছাড়া কামারখন্দ উপজেলা যুব কল্যাণ পরিষদের যে কোন ভালো কাজে সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতি পাশে থাকবে বলে আলোকপাত করেন।
সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও কামারখন্দ উপজেলা সমিতি, ঢাকার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তিযদ্ধের চেতনায় বলিয়ান হয়ে এলাকা ও দেশের কাজে যার যার স্থান থেকে আত্মনিয়োগ করতে আহবান জানান। সাবেক উপ-বন প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী কবির হায়দার বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল ভূমিকায় ছিলো যুবকরা – সেই যুবকদের সংগঠন যারা তৈরী করেছে অনায়াসে তারা কৃতিত্বের দাবী রাখে। তবে, স্বাধীনতার মূল মন্ত্রকে ভুলে গেলে চলবে না। স্বাধীনতার চেতনাকে বুকে ধারণ করে এ সংগঠন এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সুইড বাংলাদেশের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যকরী সদস্য ইমেলদা হোসেন দীপা বলেন, যেহেতু এ সংগঠন কামারখন্দের সকল যুবকদের সংগঠন সেহেতু এ সংগঠনকে সকল রাজনীতির বাইরে থাকতে হবে। এছাড়া শুধু রাজধানী ঢাকা নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজের মাধ্যমে কামারখন্দের নাম ছড়িয়ে দিতে কামারখন্দ যুব কল্যাণ পরিষদ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া কামারখন্দ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব সেলিম রেজা কামারখন্দ উপজেলা যুব কল্যাণ পরিষদের ভূয়ষী প্রশংসা করে বলেন,” আমি কামারখন্দের জনগনের পক্ষ থেকে রাজধানী ঢাকার বুকে কামারখন্দের যুবকদের জন্য ভালোবাসা নিয়ে এসেছি”। তিনি এ সংগঠনের মাধ্যমে রাজধানীর বুকে নেতৃত্ব বের হয়ে আসবে বলে উল্লেখ করেন।
আলোচনাসভার পূর্বে অতিথিবৃন্দ সভাস্থলে আসলে সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক সাদাত শাহরিয়ার শুভর নেতৃত্বে, যুগ্ম-আহবায়ক রাইসুল রিপন, তৌহিদ আকরাম সৈকত, সদস্য সংগ্রহ কমিটির আহবায়ক ইদ্রিস আলী, কমিটির জৈষ্ঠ্য সদস্য মাহমুদুল হাসান শুভ, নাইম ইসলাম, আরিফুল ইসলাম অনিক অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এর আগে বেলা ৩ ঘটিকায় সংগঠনের প্রথম নির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের আহবায়ক এম.এ.আর মুরাদ এতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি জানান, সংগঠনকে আরো ত্বরান্বিত করতে বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়াও প্রতি বছর ৭ টি ক্যাটাগরীতে উপজেলায় অবদান রাখার জন্য বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ক্যাটাগরী গুলো হলো : মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, সফল উদ্যেক্তা, নারী, সমাজসেবক/ সংস্কারক। তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কামারখন্দের কৃতি সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ক্যাটাগরীতে বীর প্রতীক জাতীয় খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব হোসেন আলী সাহেবকে কামারখন্দ রত্ন হিসেবে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া বাকী ক্যাটাগরীতে কৃতিমানদের যাচাই -বাছাই করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকী নাম ঘোষনা করা হবে । পরবর্তীতে অনারম্বর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কামারখন্দ রত্ন স্বর্ণ পদক – ২০২২ প্রদান করা হবে। এছাড়া ঐ দিনই কামারখন্দের একশ বিশিষ্ট ব্যক্তির জীবনী নিয়ে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হবে এবং কামারখন্দের শ্রেষ্ঠ দশ শিক্ষার্থীকে অনুপ্রেরনা মূলক বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া সংগঠনের যুগ্ম-আহবায়ক আতিকুর রহমান ঢাকার বাইরে বসবাস করায় তাকে সংগঠন থেকে সন্মানের সহিত অব্যহতি প্রদান করে জৈষ্ঠ সদস্য তৌহিদ আকরাম সৈকতকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। উক্ত নির্বাহী সভায় সংগঠনের দুই – তৃতীয়াংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে সংগঠন ও দেশের জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন ঢাকা হার্ট ফাউন্ডেশন মসজিদের ইমাম।