রেজওয়ানুল ইসলাম রনি,স্টাফ রিপোর্টার: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বর্তমান সরকারের ভিষন-২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে। এই লক্ষ্য মাত্রার মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারকে। জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে তৈরী হচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গভীর সমুদ্র বন্দর যা অনেকটাই দৃশ্যমান। অন্যদিকে সোনাদিয়া দ্বীপ ও টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নে তৈরী হচ্ছে বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র। এছাড়া চট্রগ্রাম থেকে সাগরের তীর ঘেষে যে মেরিন ড্রাইভ তৈরীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা কক্সবাজার শহরের পাশের মেরিন ড্রাইভের সাথে সংযুক্ত হবে। সে ক্ষেত্রে পুরো মহা উন্নয়নের কেন্দ্রে অবস্থান করছে কক্সবাজার শহর তথা কক্সবাজার পৌরসভা। কক্সবাজার বিমান বন্দর বর্ধিত হলে সরাসরি বিদেশী পর্যটক ও ব্যবসায়ীরা কক্সবাজারে অবস্থান করার সংখ্যা বেড়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে কক্সবাজার শহরের পর্যটন এলাকা যেহেতু কক্সবাজার পৌরসভার ভেতর অবস্থান করছে তাই সরকারের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রথম দরকার একটি উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্থানীয় সরকার বিভাগ সে বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েই মেয়র মুজিবুর রহমানের হাত ধরে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পৌরসভার যোগাযোগ ব্যবস্থায় তৈরীতে করতে যাচ্ছে নতুন মাইলফলক।
স্থানীয় সরকার বিভাগের মিউনিসিপ্যাল গর্ভনেন্স এন্ড সার্ভিসেস প্রজেক্ট – এম.জি.এস.পি এবং আরবান গর্ভনেন্স এন্ড ইনফাসট্রাকচার ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট – ইউজিপ এর মাধ্যমে কক্সবাজারে পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের আনাচে-কানাচে চলছে এই কর্মযজ্ঞ। বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নেওয়া হয়েছে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প যা অল্প দিনের মধ্যে শেষ হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ক্ষেত্রে সড়ক -উপ সড়কের উন্নয়নকে সমান গুরুত্ব দিয়ে একটি আন্তজার্তিক মানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজ করে যাচ্ছে । কিছু দিনের মধ্যে পর্যটন নগরীর কক্সবাজারের সড়ক ব্যবস্থা পাল্টে যাবে।
কক্সবাজার শহরের সঙ্গে পাশ্ববর্তী এলাকা সমূহের যাতায়াত করতে সুগন্ধা চৌরাস্তা পর্যন্ত দ্রুত সময়ে যাতায়াত করার জন্য পর্যটকদের সুবিধার জন্য চলাচলের জন্য ওয়ান বাই ওয়ান রুট নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে। ধীর গতির যানবহনের জন্যও থাকছে আলাদা লেন। এছাড়া খুরুশকুল রাস্তার মাথা থেকে কলাতলী পর্যন্ত ৩২ কিমি পর্যন্ত কাজ শেষ প্রান্তে। কক্সবাজার দ্রুত হবে যানজট, যাত্রাপথ হবে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময়। গোল দীঘির পাড় থেকে বাজার ছড়া পর্যন্ত সাড়ে তিন কি.মি সড়ক এর কাজ শেষ হয়েছে। কাজ গুলো দ্রুত শেষ করতে দিনের পাশাপাশি রাতেও ঢালাই করা হচ্ছে। কক্সবাজার প্রেসক্লাব থেকে লাবনী পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক ও ড্রেনের কাজ প্রায় শেষ প্রান্তে। ড্রেনের কাজ গুলো শেষ হলে কক্সবাজার শহরে আর বৃস্টির পানিতে জ্বলাবদ্ধতা তৈরী হবে না। সড়কের কাজ শেষ হলে উন্নত ও সহজ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে পর্যটন নগরী কক্সাবাজারে। যা ২০২২ সালের মে মাসের মধ্যে মেয়াদের শেষ হওয়ার পূর্বে যানবহন চলাচলের জন্য উন্মক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান।
কলাতলী আদর্শ বিদ্যালয়ের শিক্ষক পারভেজ চৌধুরী জানান, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান অল্প দিনে কক্সবাজার সড়কের যে কাজ দিখিয়েছে তা খুবই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কক্সবাজার শহরের উপ-সড়কগুলোতে আগের মত আর যানজট ও মানুষের চলাচলে ভোগান্তী দেখা যায় না। তবে, চলমান উন্নয়নের কারণে দুই একটি সড়ক বন্ধ থাকায় আমাদের একটু কস্ট হচ্ছে। তবে সড়কের উন্নয়নের কাজ দেখে এগুলো ভুলে যাই। ধৈর্যের ফল সব সময় সুফল হয়। সী গাজীপুর রিসোর্টের সি.ই.ও বলেন, মেয়র হোটেল-মোটেল জোনের সড়কগুলো করে দেওয়ায় আমাদের পর্যটকদের যাতায়াত অনেক সুবিধা হয়েছে। আগে আমাদের হোটেল-মোটেলে পর্যটক আসতে চাইত না, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো ছিলো না। এ সড়ক গুলো হওয়ায় আমাদের ব্যবসা এখন চাঙ্গা। ঝিনুক দোকান মালিক সমিতির ব্যবসায়ী মি. হাবিব বলেন মেয়র মুজিবকে নিয়ে অনেকে উল্টা-পাল্টা মন্তব্য করতে পারে কিন্তু সে যে উন্নয়ন করছে এগুলো শেষ হলে কক্সবাজার হবে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়নের রোল মডেল।
উন্নয়ন কাজে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহল দূর্ণিতীর অভিযোগ তুলছে এ বিষয়ে মেয়র মুজিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার নেত্রী বাঙালীদের শেষ আশ্রয় সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেছেন, গাছে ফল থাকলে ঢিল পরবেই। অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তা ক্ষতিয়ে দেখব তবে ঢালাও ভাবে অভিযোগ দিলে সেটি যে উদ্দেশ্য প্রণোদিত তাও জনসাধারনকে বুঝতে হবে। কারণ আমি রাজনীতি করি সরকারি দলের সাধারন সম্পাদক আমি, আমার প্রতিপক্ষ রয়েছে। বর্তমান অর্থবছরের কক্সবাজার পৌরসভার জন্য আরো পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্দের জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বদিচ্ছা ছাড়া এ উন্নয়ন অগ্রযাত্র অব্যাহত রাখা সম্ভব ছিলো না। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাইজুল ইসলাম ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব কক্সবাজারের কৃতি সন্তান হেলাল উদ্দিনের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, এম.জি.এস.পি প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ৮ টি প্যাকেজের কাজ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রাস্তার দৈর্ঘ্য ২৪.৬৪ কিলোমিটার, ড্রেনের দৈর্ঘ্য ২৩.৭৬ কিলোমিটার এবং স্টীট লাইটের দৈর্ঘ্য ২৫.৮৪ কিলোমিটার। যার কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ শেষ হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এ রাস্তা গুলো পুরোপুরি যানবহন চলাচলের উপযোগী হবে। এছাড়া ইউজিপ-থ্রি এর ১২ টি কাজের মধ্যে রাস্তার দৈর্ঘ্য ১৯.৫৭ কিলোমিটার, ড্রেনের দৈর্ঘ্য ২৩.৫২ কিলোমিটার এবং স্টীট লাইটের দৈর্ঘ্য ৭.৯৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে ইউজিপ – থ্রির কাজ শেষ হয়েছে ৬০ ভাগ। এ প্যাকেজের কাজ গুলোও সঠিক সময়ের মধ্যে শেষ হবে বলে জানা যায়।