চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেছে এক বৃদ্ধ। মঙ্গলবার (৩১ মে) বেলা সাড়ে ১১টার সময়ে গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের দেওপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শরীফ হোসেন (৬৩) দেওপুরা গ্রামের মৃত ইয়াহিয়া মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা, নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিজ বাড়ীর দ্বিতীয় তলার শয়ন কক্ষে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি শরীফ হোসেন। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে রাজশাহী থেকে ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ডিপার্টমেন্ট-সিআইডি ও থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত করেছে।
নিহত শরীফ হোসেনের বোন খাতিজা খাতুন বলেন, বাড়ির দোতলার ঘরে অবস্থান করছিল আমার ভাই। অনেক ডাকাডাকি করেও কোন সাড়া না পাওয়া গেলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেখতে যায়। গিয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। তার মাথা থেকে রক্ত পড়ছিল। এমন অবস্থা দেখে চিৎকার করলে আশেপাশে থেকে লোকজন ছুটে আসে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জানা মতে, আমার ভাইয়ের কোন শত্রু ছিল না। তবে গত ৮-১০ দিন থেকে মানসিক চিন্তায় ছিলেন আমার ভাই। তবে কি নিয়ে দুঃচিন্তা বা কি নিয়ে আত্নহত্যা করেছেন, এবিষয়ে কাউকে কখনও কিছু বলেনি। আত্মহত্যার আগে আজকে সকাল থেকেই প্রচুর পরিমাণে সিগারেট ও চা খাচ্ছিল আমার ভাই।
নিহতের আরেক বোন রাবেয়া হক জানান, আমরা দুই বোন ও ভাই ছাড়া আপনজন বলতে বাড়িতে কেউ নেই। তবে বাড়িতে আরও কয়েকজন কাজের লোক সবসময়ই থাকে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাড়ির পাশে ধান মাড়াইয়ের কাজ চলছিল। তাই গুলি করার সময়ে বাড়িতে সবাই থাকলেও গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিহত শরীফ হোসেনের কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, নিহত শরীফ হোসেন ও তার এক বোন খাতিজা খাতুন অবিবাহিত ছিলেন। শরীফ হোসেনের নিজের প্রায় ৪০০ বিঘা জমি ছিল। গত কয়েকদিন আগে বড় বোন রাবেয়া হককে তার জমিজমা দান করে দেন। পরে তার বোন দুই ছেলের নামে দানস্বত্ব দলিল করে লিখে দেন। এনিয়ে গত কয়েকদিন ধরে শরীফ হোসেন মানসিকভাবে বিষন্ন ছিলেন।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, গোমস্তাপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আজম, গোমস্তাপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) দিলীপ কুমার দাস। ওসি দিলীপ কুমার দাস বলেন, নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে আত্নহত্যার খবর পেয়ে গোমস্তাপুর থানা পুলিশ ও রাজশাহী থেকে সিআইডির একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সিআইডির দল আলামত সংগ্রহ করেছে।
তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত মরদেহ বাড়িতে রয়েছে। নিহতের পরিবার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রটের নিকট গেছেন। পরিবারের দাবির প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ময়নাতদন্ত না করার অনুমতি দিলে তার পরিবার মরদেহ দাফন করবে। তবে অনুমতি না পেলে মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হবে।