বৃষ্টি ও পাহারী ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ৩৫ গ্রাম প্লাবিত
সাইফুর রহমান শামীম,,কুড়িগ্রাম : ১২.০৬.২০২২
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এদিকে জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা ও ব্রম্মপুত্রের পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী রৌমারী উপজলার জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার রৌমারী, শৌলমারী, দঁাতভাঙ্গা ও যাদুর চর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষজন। নৌকায় করে যাতায়াত করছে এসব এলাকার মানুষজন। বাদাম, পাট ও সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে এখানকার কৃষকরা।
রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক আবুল হোসেন জানান, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমির বাদাম ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। আমরা খুব ক্ষতির মুখে পড়েছি।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্ল্যাহ উপজেলার ৩৫ গ্রামের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া উপজেলার ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় সাময়িকভাবে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, রৌমারী উপজেলার ২১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল জানান, বৃষ্টির সাথে নেমে আসা উজানের পানিতে রৌমারী উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে কি পরিমান মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে তা নিরুপনে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি পানি বন্দি মানুষদের সহায়তার কাজক্রম অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি নুন খাওয়া পয়েনেট বিপদসীমার ২০৬ সেনিটমিটার ও চিলমারী পয়েনেট বিপদসীমার ১৬৯ সেনিটমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ধরলার পানি সেতু পয়েনেট বিপদসীমার ১২৫ সেনিটমিটার নীচ দিয়ে ও তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েনেট বিপদসীমার ৫৫ সেনিকমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢলে ও বৃষ্টিতে রৌমারী উপজেলার কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়লেও আপাতত বড় ধরনের কোন বন্যার সম্ভাবনা নেই। তবে আগামী ২০ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে।