নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধিঃ পারিবারিক কলহের জের ধরে নাটোরের নলডাঙ্গায় মো. আব্দুল আলিম (৪৫) নামে এক ইউপি সদস্য খুন হয়েছেন। একইসঙ্গে স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রিমা বেগম (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (১১ জুলাই) দিনগত রাত পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল আলিম উপজেলার মাধনগর গ্রামের মৃত তাহেরের ছেলে। তিনি মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। রিমা বেগম নিহত আব্দুল আলিমের দ্বিতীয় স্ত্রী ও মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের মেয়ে।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, উপজেলার মাধনগর জোয়ারপুর গ্রামে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিমা বেগমের সাথে শশুর বাড়িতে মাঝে মধ্যে থাকতেন মাধনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলিম। সোমবার দিনগত রাতে ওই বাড়িতে যান ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম। রাত পৌনে তিনটার দিকে তাদের ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে পরিবারের সদস্যরা ঘরে ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে পড়ে থাকতে দেখেন। তবে সে সময় ঘরের জানালা ভাঙ্গা ছিল।
এসময় ইউপি সদস্যকে মৃত অবস্থায় ও রিমাকে পেটে ছুরিকাহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তারা পুলিশে খবর দেন। আর রিমা বেগমকে তারা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে সকালে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক যুবায়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে-তার মাথায় হালকা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু কিভাবে ইউপি সদস্য আব্দুল আলিম মারা গেলেন সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ঘটনার রাতে নিহতের শাশুড়ি, শ্যালিকা ও তারা স্বামী-স্ত্রী ওই বাড়িতে ছিলেন।
এবিষয়ে তদন্ত চলছে, মামলার প্রস্তুতিও চলছে। মামলা হলে তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে নিহতের ছোট ভাই আশিক অভিযোগ করে বলেন, তার বড় ভাই ইউপি সদস্য আব্দুল আলিমের মৃত্যু নিয়ে রহস্য আছে। কারন ভাইয়ের স্ত্রীকে ছুরিকাহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলেও তার ভাইকে নেয়া হয়নি। অথচ ওই সময় তার ভাইও আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছিল এবং জীবিত ছিল।
কিন্তু কেন, কি কারনে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো না তা বুঝতে পারছেন না। এছাড়া ঘরের জানালা ভাঙ্গার বিষয়টিও স্পষ্ট নয়। িিতনি বলেন, তার ভাইয়ের মৃত্যুতে অন্য কোন কারন রয়েছে। বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনসহ ন্যায় বিচার দাবী করেন।