জাহাঙ্গীর,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ ভরা মৌসুমে লোকসান হলেও বর্তমান এখন ফুলকপি চাষে লাভের দেখা পাচ্ছেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার কৃষকরা। এ ছাড়াও অন্য ফসলের তুলনায় সময়য়ও লাগছে কম। ফলে আগাম জাতের ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন এই উপজেলার কৃষকরা। এখন প্রায় বছরের পুরোটা সময় তাঁরা ‘আগাম জাতের’ ফুলকপি চাষ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় কৃষকরা এই আগাম জাতের এ ফুলকপি চাষশুরু করেন বলে জানা যায়। উত্তর রেলগেট এলাকার কৃষক মিন্টু মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ধান-গম চাষকরে আমরা খুব একটা লাভবান হতে পারিনি। ধান চাষকরে লোকসান গুনতে হয়। তাই ফুলকপি চাষকরছি। শীতকালে ফুলকপির ভরা মৌসুমে দাম একটু কম হয়। তবে অন্য সময়ে বেশ ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই আমরা সারা বছরই এখন ফুলকপি চাষকরছি।
তিনি আরও জানান, তিনি এ বছর দুই বিঘা জমিতে আগাম জাতের ফুলকপির চাষকরেছেন। খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি ২০-২৫ হাজার টাকা। বাজারে এখন যে দাম রয়েছে তাতে বিঘাপ্রতি ৫০-৭০ হাজার টাকা পাবেন বলে আশা রাখেন।
একই এলাকার আরেকজন কৃষক সুরুজ আলী। তিনি উপজেলার হিসনাপাড়া মাঠে ৪ বিঘা জমিতে ফুলকপি আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, এর আগে দেখা যেত শীতকালে জমিতে ফুলকপির চাষহতো। সে সময় ভালো দাম পাওয়া যেত না। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা এখন সারা বছর ফুলকপির চাষকরি। তিনি আরও জানান, এখানকার ফুলকপি ঢাকা, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট এলাকায় যায়। এ ছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার ও কুষ্টিয়া শহরেও বিক্রি হয়।
স্থানীয়রা জানান, গ্রীষ্মকালীন ফুলকপি আবাদ করে অনেকের ভাগ্যের চাকা বদলে গেছে, অনেকের পরিবারে এসেছে সচ্ছলতা। ফুলকপি চাষি খলিলুর রহমান সারাবছরই ফুলকপি চাষকরেন। এ বছর তিন বিঘা জমিতে ডন জাতের গ্রীস্মকালীন ফুল কপি আবাদ করেছেন।
ভেড়ামারা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, খরিপ-২/ ২০২২-২৩ উৎপাদন বর্ষে উপজেলায় আগাম শীতকালীন সবজি আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪১৭ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু ফুলকপির আবাদ ধরা হয়েছে ১০৫ হেক্টর।
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শায়খুল ইসলাম বলেন, ভেড়ামারা উপজেলার এই অঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এ ছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে এই অঞ্চলের মানুষ আধুনিক চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। চাষিরা আগাম জাতের ফুলকপি চাষকরে এবং সঠিক মার্কেট ধরতে পারায় বেশ লাভোবান হচ্ছেন। ফলে তারা ফুলকপি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।।