মোঃ কবির হোসেন,স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার জন্য নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করাই হবে মুজিব বর্ষের লক্ষ্য, যাতে দেশের প্রত্যেক মানুষ উন্নত জীবন যাপন করতে পারেন। দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে ঘর দিতে পারার চেয়ে বড় কোনো উৎসব আর কিছুই হতে পারে না।
মুজিববর্ষের গৃহ প্রদান উপলক্ষে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক কার্যালয়ে হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ।
২০ শে মার্চ (সোমবার) দুপুরে এই সংবাদ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর সর্বপ্রথম জাতির পিতাই দেশের ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলা) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমিহীন-গৃহহীন-অসহায় মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ প্রদান করেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কান্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরবর্তীতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সারা দেশে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল পরিবার পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৫২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুজিব শতবর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না”- মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ভূমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য জমিসহ গৃহ প্রদানের ন্যায় কার্যক্রম পৃথিবীতে আর ২য় কোনো নজির নেই। মাদার অব হিউম্যানিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে এরূপ কার্যক্রম সফল বাস্তবায়ন করে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২২ মার্চ, ২০২৩ তারিখ বুধবার ৪র্থ পর্যায়ের গৃহসমূহ উপকারভোগী পরিবারের নিকট জমিসহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রশাসন উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ভিডিও লিংক এর মাধ্যমে যুক্ত থাকবে। গণভবন প্রাপ্ত হতে অনুষ্ঠানটি সকাল ১০:১৫ ঘটিকায় শুরু হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ১ম পর্যায়ে কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা মৌজায় (ছাগলা হাসনাইন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন) ১৪টি এবং কাচিয়া ইউনিয়নের পদ্মামনসা মৌজায় (মীরা বাড়ি সংলগ্ন) ১৪টি-সহ মোট ২৮টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়। ২য় পর্যায়ে কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা মৌজায় (ছাগলা হাসনাইন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন) ১৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়। ৩য় পর্যায়ে কাচিয়া ইউনিয়নের পদ্মামনসা মৌজায় ২১টি, কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা মৌজায় ৬০টি, সাচড়া ইউনিয়নের চরগাজীপুর মৌজায় ২১টি, টবগী ইউনিয়নের দালালপুর মৌজায় ৪০টি গৃহসহ মোট ১৪২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহসহ পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ে ১০৬টি গৃহের বরাদ্দ পাওয়া যায়। যার মধ্যে কুতুবা ইউনিয়নের ছাগলা খাস জমিতে ০৪টি, পক্ষিয়া ইউনিয়নের উদয়পুর মৌজায় ক্রয়কৃত জমিতে ৫২টি, হাসাননগর ইউনিয়নের (খাস মহল বাজার সংলগ্ন) হাসাননগর মৌজায় ক্রয়কৃত জমিতে ১৪টি এবং টবগী ইউনিয়নের দালালপুর মৌজায় ক্রয়কৃত জমিতে ৩৬টি গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর মধ্যে পক্ষিয়া ইউনিয়নের উদয়পুর ৩৭টি, হাসাননগর ইউনিয়নে ১৪টি এবং কুতুবা ইউনিয়নে ৪টি গৃহ নির্মাণ করা সম্পন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে প্রদত্ত নমুনা মোতাবেক কবুলিয়ত দলিল সম্পাদন, নামজারি সম্পন্ন ও গৃহ প্রদানের সার্টিফিকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় সুপেয় পানি ও বৈদ্যুতিক সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে উপকারভোগীগণ এবং পরবর্তীতে তাদের ওয়ারিশগণ ০২ (দুই) শতাংশ জমিসহ গৃহের মালিকানা লাভ করবেন।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন , উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুন্নি ইসলাম,
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বড়মানিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন হায়দার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম, ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব রাসেল আহম্মেদ মিয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজা ইয়াসমিন, বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনির হোসেন মিয়া, পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সরদার, টবগী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম হাওলাদারসহ উপজেলার সকল কর্মকর্তাগন, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের প্রতিনিধিসহ উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীগণ ।