মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলার প্রায় সব উপজেলাতে লিচুর বড় বড় বাগান রয়েছে। এবারে আশানুরূপ লিচুর ফলন ভালো হাটে বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। ঝড়ের আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এখন গাছ থেকে লিচু পাড়তে আরো ১৫/২০ দিন সময় লাগবে। কিন্তু এর মধ্যে যদি ঝড় হয় তাহলে লিচু ঝড়ে পড়বে আর ক্ষতি হবে ব্যবসায়ির। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার মুন্সিরহাট, আকচা, নারগুনের কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, রোদের প্রকোপতার কারনে অনেক লিচুতে ক্ষত দাগ হয়েছে। ঝড়ের আশঙ্কা থাকলেও লিচু পরিপক্ব করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকেরা। প্রতিটি গাছের নিচে দেওয়া হচ্ছে সার ও সেচ। ১৫/২০ দিনের মধ্যে লিচু পরিপক্ব হয়ে বাজারজাত করা সম্ভব হবে বলে জানান ব্যবসায়িরা। গত বছরের চেয়ে এবারে সার, সেচ ও শ্রমিকের মজুরির দাম বাড়ায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা। তবে ঝড়ে লিচু ঝড়ে না পরলে গতবারের লোকসান পুষিয়ে লাভবান হবে বলে আশা করছেন তারা। লিচু বাগানের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর ঠাকুরগাও জেলার লিচু দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। লিচুর ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরই লিচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লিচুর ভালো ফলন হয় বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ঠাকুরগাও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শতাধিক বাগানে দেশি পাতি লিচু, কদমি লিচু, বোম্বাই লিচু, চায়না টু ও চায়না থ্রির বাগান রয়েছে। কিছু কিছু বাগানের দেশি পাতি লিচু পাড়তে শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। তীব্র গরম ও সময়মতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় অনেক গাছে মুকুল এলেও রোদে পুড়ে ও বাতাসে ঝরে গেছে অনেক মুকুল। তাই লিচু পড়া ও পোকামাকড় রোধে বালাইনাশক স্প্রে করে শেষ সময়ের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন লিচু বাগানের চাষিরা। চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে আসা ব্যবসায়ী ইসলাম বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে লিচুর ব্যবসা করি, এ বছর লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। যদিও খরায় অনেক লিচু ঝরে পড়েছে, তারপরও লাভ হবে বলে আশা করছি। লিচু ব্যবসায়ী জলিল জানান, তিনি ১০ বছর এই লিচু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এবার প্রায় ১৭ একর বাগান নিয়েছেন। বাগানগুলোতে পাতি লিচু, কদমি লিচু, চায়না টু এবং চায়না থ্রির জাতের লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার পাইকাররা গাছের লিচু কিনেছেন প্রতি হাজার ১৫০০ টাকা দরে।
তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ৬০ জন শ্রমিক কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের তিন বেলা খাবার ও পকেট খরচসহ শ্রমিকপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক ঔষুধ দিতে হয়। এ বছর খরচ বেশি হওয়ায়, লিচুর দাম টা একটু বেশি হবে। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, গত বছর ২৫৬ টি বাগানে ৯০৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হয়েছিল। এবারে উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করছেন কৃষি অফিস।