নিজস্ব প্রতিবেদক,রাজশাহীঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. এনামুল হকের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে নারী শিক্ষককে যৌন হয়রানি মূলক আচারনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ‘নারী নির্যাতন ও সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটি ‘ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক রাসেদা খালেদ বলেন -একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এমন ঘটনা ঘটাবেন এটা অকল্পনীয়। তিনি যে অশ্লীল বাক্য এবং অঙ্গভঙ্গি করেছেন তার সহকর্মীর সাথে তা ঠিক করেননি। আমরা ন্যায় বিচার চাই এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মাহমুদা কানিজ কেয়া বলেন,শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন, ভাষার ব্যবহার এগুলো যে হয়রানি মুলক। এই ব্যবহারগুলোর যদি শাস্তি দিতে না পারি তাহলে এগুলো আরো বাড়বে। তাই আমরা এর শাস্তি দাবি করছি।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহিলা আইন, বিভাগীয় সভাপতি দিল সেতারা, মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান আলী শাহজাহান,থিয়েটারকর্মী কামরুল্লাহ সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবুল হাসান খন্দকার,সেক্টর কমান্ডার বিভাগীয় সভাপতি,সভাপতি শিক্ষক সমিতি শফিকুল রহমান বাদশাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২১ মে দুপুরে অফিস কক্ষে অন্য শিক্ষকদের সামনেই অধ্যাপক এনামুল হক সহকর্মী নারী শিক্ষক মাহবুবা কানিজ কেয়ার সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে অশোভন এবং যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও ভাষা ব্যবহার করেন। একাডেমিক আলোচনার মধ্যেই তিনি ওই শিক্ষকের কাপড় খুলে ফেলার হুমকি দেন। এর পরি প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভা হয়। এ সময় তাকে ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ থেকে বিরত থাকতে বলা হলে তিনি আবারও অশোভন আচরণ করেন এবং অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। এ আচরণের জন্য তিনি ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে মাহবুবা কানিজ কেয়া বলেন, “আমাদের সহকর্মীদের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক এনামুল এমন অশালীন আচরণ করেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। পরে বিভাগের সভাপতি হিসেবে আমার দায়বদ্ধতা থেকে অভিযোগ দিয়েছি। একজন অধ্যাপকের কাছ থেকে এমন আচরণ লজ্জাজনক।”
একই দিন বিভাগের নয়জন শিক্ষক বিভাগের সভাপতির অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ঘটনার বর্ণনা করে অধ্যাপক এনামুলের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানোর পরেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তবে যৌন হয়রানির বিষয়টিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ উল্লেখ করে অধ্যাপক এনামুল হক বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য আমি দ্রুত উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে নারী শিক্ষককে যৌন হয়রানির বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে বলেন, “আমরা দুই পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ ইতিমধ্যে লিগ্যাল সেলে পাঠানে হয়েছে। সেখান থেকে যৌন হয়রানির সেলে যাবে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”