স্বপন কুমার রায়,খুলনা ব্যুরো প্রধানঃ খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ঝুঁকিপুর্ণ কেন্দ্রের তালিকে প্রস্তুত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।ওই তালিকা অনুযায়ী প্রায় ৫৬ শতাংশ কেন্দ্রেই ঝুঁকিপুর্ণ।রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) সুত্রেজানা জানাযায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে ৩১ টি ওয়ার্ডরয়েছে।ওয়ার্ড গুলোর আওতায়ভোটকেন্দ্র রয়েছে২৮৯টি। এবার নির্বাচনে ১৬১টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপুর্ণ ও১২৮ টি কেন্দ্রকে সাধারন হিসাবে চিহ্নিত করেছেকেএমপি।
আগামীকাল ১২ জুন সোমকার ইভিএমে খুলনা সিটি নির্কাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।নির্বাচনে
মেয়র পদে পাঁচ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেকের বিপরীতে প্রার্থী ছিলেন বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। নির্বাচনে দুই শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় ওই বছর ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রও ছিল বেশি। সেবার প্রায় ৮১ শতাংশ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এবারের তালিকা অনুযায়ী ৪, ৬, ৭, ১০ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সব ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বাদে অন্য সব কেন্দ্র রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণের তালিকায়। তবে ১৩, ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কোনো কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ওই তিন ওয়ার্ডে কেন্দ্র রয়েছে ২৩টি।৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৬টি, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৯টি, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪টি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ১২টি ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৯টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ওই ৫টি ওয়ার্ডের ৪০টি ভোটকেন্দ্রের সব কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এর বাইরে ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৬টি, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ৪টি কেন্দ্রের ১টি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্র ৪টি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৬টি কেন্দ্রের ৩টি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৫টি কেন্দ্রের ২টি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩টি কেন্দ্রের ৯টি, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ৭টি কেন্দ্রের ৫টি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৪টি, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১২টি কেন্দ্রের ৪টি, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৭টি কেন্দ্রের ৩টি, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩টি কেন্দ্রের ১০টি, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ কেন্দ্রের ৫টি, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রের ৪টি, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৬টি, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের ১০টি কেন্দ্রের ৫টি, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৬টি, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৩টি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১৬টি কেন্দ্রের ১০টি, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রের ৬টি, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৮টি কেন্দ্রের ৩টি, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রের ৮টি ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫টি কেন্দ্রের ৭টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা বলেন, বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ ও সাধারণ ভোটকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার এবং সাধারণ প্রতিটি কেন্দ্রে ৭ জন পুলিশ ও ১০ জন আনসার মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এর বাইরে ৭১টি মোবাইল প্যাট্রোল টিম, ২০টি অতিরিক্ত মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও প্রতিটি থানায় স্ট্যান্ডবাই ফোর্স থাকবে। খুলনা পুলিশ কমিশনার বলেন, নির্বাচনের কাজে মোট ৪ হাজার ৮২০ জন পুলিশ ও ৩ হাজার ৪৬৭ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া বিজিবি ও র্যাব সদস্যরাও নির্বাচনের দিন মাঠে থাকবেন।
অপরদিকে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বলেন, গতবারের মতো এবারও ২৮৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে গতবারের চেয়ে ভোটকক্ষ বাড়ানো হয়েছে ১৭১টি। এবার ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৭৩২টি। গত নির্বাচনে ভোটকক্ষ ছিল ১ হাজার ৫৬১টি।
আলাউদ্দিন বলেন, ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কিনা, তা দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এজন্য প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি ও কেন্দ্রের সুবিধাজনক স্থানে দুটি করে ক্লোজড সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। মোট ২ হাজার ৩১০টি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে সব ভোটকেন্দ্র।
তিনি তার কার্যালয়ে এবং ও নির্বাচন কমিশনাররা ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে বসে সার্বক্ষণিক ভোটের চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন।
এসব সিসিটিভি ক্যামেরায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ড রাখা হবে।