আবু সায়েম আকন,ঝালকাঠি জেলা প্রতিনিধিঃ বাবা ছিলেন ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্মুখ যোদ্ধা। বাংলাদেশকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে, মা বোনের ইজ্জত বাঁচাতে নিজ পরিবারের কথা না ভেবে ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে। যেই বাবা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন দেশের জন্য সেই বাবার সন্তান আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন অর্থভাবে বিনা চিকিৎসায়।
বলছি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সত্যনগর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত শেখ এনছান আলীর কনিষ্ঠ সন্তান মাহমুদুল ইসলাম রনির(৩৫) কথা। শুক্রবার ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটের দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেক্টাম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বাংলাদেশের ডাঃ বলছিল ইন্ডিয়া গিয়ে অপারেশন করাতে। কিন্তু তাতে সব খরচ মিলিয়ে বিশ থেকে পঁচিশ লক্ষ টাকার দরকার ছিল। কিন্তু রনির কাছে মুক্তিযুদ্ধের সন্তানের আত্মসম্মান ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। দুইবার ইন্ডিয়া যাওয়ার জন্য ভিসার আবেদন করলেও মাত্র ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেয়ায় বাতিল করা হয় আবেদন। যেই দেশে রাজাকারের সন্তান জীবনযাপন করে উচ্চ বিলাসি আর সেই দেশের মুক্তিযুদ্ধের সন্তান মারা যায় অসহায়ের মত। এই জন্যই কি স্বাধীন করতে ঝাপিয়ে পরেছিল মুক্তিযোদ্ধারা?
ছোট একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রনি চালাতো পাঁচ বছরের এক সন্তান সহ নিজের সংসার। তিন বছর যাবৎ এই রোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে নিজ সম্পদের প্রায় সবটুকুই হারিয়েছিল। আজ নিজ সন্তান এবং স্ত্রীর ভবিষ্যত অন্ধকার করে নিজেই পারি জমিয়েছে পরপারে। রনি আর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের প্রাপ্য বুঝে পেতে ফিরে আসবেনা কোনদিন। কিন্তু আর কতকাল রনিরা এমন বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে? এমন দিনের অপেক্ষায়ই কি রনিদের বাবারা ঝাপিয়ে পরেছিল মুক্তিযুদ্ধে?