মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ বাড়ির ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির বাহারি রঙের মাছ চাষ করে প্রতিমাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন ঠাকুরগাঁও জেলার গোলাম মর্তুজা মনা ৷ শখের বসে রঙিন মাছ চাষে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। তার সফলতায় বিদেশি জাতের এ মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে ৷ ইট, পাথর, সিমেন্টে গড়া ভীষণ ব্যস্ত জীবন ব্যবস্থায় এক পলকের জন্য চোখ আটকে যায় বাহারি রঙবেরঙের অ্যাকুরিয়ামের ওপর ৷ ক্রমশ এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। মনের তৃপ্তির পাশাপাশি শোভাবর্ধক হিসেবে ঘরের মধ্যে কাচের শিট দিয়ে ঘেরা এক কৃত্রিম জলাধার। বাড়ির ছাদকে কাজে লাগানোর ভাবনা থেকে রঙিন মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন এই চিকিৎসক। ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের সরকারপাড়ার বাসিন্দা গোলাম মর্তুজা মনা। পেশায় তিনি একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। আড়াই বছর আগে শখের বসে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। বাজারে চাহিদা থাকায় বছর ঘুরতে না ঘুরতে সফলতার মুখ দেখেন তিনি ৷ স্বল্প সময়ে তার এমন সফলতা দেখে রঙিন মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে ৷ ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁও জেলায় বিদেশি জাতের রঙিন মাছ চাষ করেন ২০ জন উদ্যোক্তা। ইতিমধ্যে এ মাছ চাষে সফলও হয়েছেন অনেকে। ক্রমশ বাড়ছে এ মাছ চাষের প্রবণতা। মনার খামারে গাপ্পি, গোল্ড ফিশ, কমেট, কই কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কই, মলি, গাপটিসহ ২০ প্রজাতির রঙিন মাছ রয়েছে৷ প্রতি মাসে গড়ে মাত্র ৫০০ টাকার খাবার খরচ হয় তার। খামার থেকে পাইকারি দরে মাছ বিক্রির পাশাপাশি বিক্রি করা হয় খুচরা দরে। মাছ বিক্রি করেই প্রতি মাসে আয় করছেন ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা৷
রঙিন মাছ চাষে সফলতা অর্জন করায় প্রতিনিয়ত তার বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। রঙবেরঙের মাছ আর স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভের কথা শোনে রঙিন মাছ চাষে আগ্রহ জানিয়েছেন অনেকে।
রঙিন মাছ দেখতে আসা আশরাফুল ইসলাম বলেন, মনা ভাই ছাদে মাছ চাষ করে শুনেছিলাম। আজকে নিজের চোখে দেখলাম। এত অল্প পরিসরে আয় করা সম্ভব জানা ছিল না। উনার কাছে আমিও এই মাছ চাষ সম্পর্কে জেনে নিব। মাছ কিনতে আসা শিরিন আক্তার বলেন, আমার বাসায় একুরিয়াম আছে। আমি মনা ভাইয়ের এখান থেকে মাছ নিয়ে যাই। রঙিন মাছ ঘরের সৌন্দয্য বৃদ্ধি করে। সফল উদ্যোক্তা গোলাম মর্তুজা মনা বলেন, বাড়ির ছাদকে কাজে লাগানোর দৃঢ় প্রত্যয়ে শখের বসে রঙিন মাছ চাষ শুরু করি ৷ অল্প সময়ের মধ্যে সফলতা পেয়েছি। মৎস্য অধিদফতর ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা আরও বেশি পেলে মাছ চাষের পরিধি বাড়াতে চাই। সেই সঙ্গে কেউ যদি আগ্রহী হয় আমার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করব।
ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা খালিদুজ্জামান বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলায় আগের চেয়ে বেড়েছে বিদেশি প্রজাতির রঙিন মাছ চাষ। উদ্যোক্তা গোলাম মর্তুজার পাশাপাশি নতুন কেউ রঙিন মাছ চাষ আগ্রহী হলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।