মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা :: সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলে কয়েক বছর ধরে সামুদ্রিক শুটকির পাশাপাশি রপ্তানী হচ্ছে মিঠাপানির শুঁটকি মাছ। জেলার উপকূল অঞ্চলের প্রান্তিক চাষীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করে এ মাছ রোদ্রে শুকিয়ে শুঁটকি বানিয়ে রপ্তানি হচ্ছে। এসব শুঁটকি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে পাশের দেশ ভারতে। এছাড়া উত্তরবঙ্গ ও চট্টগ্রামে যাচ্ছে দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলে উৎপাদিত এই শুঁটকি মাছ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার শুঁটকি উৎপাদনকারী সাধন চন্দ্র জানান, গত তিন-চার বছর ধরে শুঁটকি উৎপাদন করেন তিনি। এসব শুঁটকির মধ্যে সিলভার কার্প, বাটা, তেলাপিয়া, পুঁটি ও মৃগেল মাছ রয়েছে। প্রতি মাসে সাত-আট হাজার কেজি শুঁটকি উৎপাদন করেন তিনি। তার উৎপাদিত শুঁটকি নীলফামারীর সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করেন তিনি। সাতক্ষীরার মিঠাপানির শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে উত্তরবঙ্গ ও চট্টগ্রামে। বর্তমানে প্রতি মণ শুঁটকি পাইকারি বিক্রি করছেন ১৮-২০ হাজার টাকা। শুঁটকি উৎপাদনে সম্ভাবনাময় সাতক্ষীরা জেলা। এ অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হয় বলে জানান তিনি। বিনেরপোতা এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ী প্রমান্ত কুমার জানান, স্থানীয়ভাবে কম দামের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে তা শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে এসব শুঁটকি দেশের বিভিন্ন এলাকার পোলট্রি ও মাছের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়। এছাড়া সিলভার কার্প, মৃগেলসহ অন্যান্য কার্পজাতীয় মাছ শুঁটকি করে সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামে সরবরাহ করেন। শুঁটকি ব্যবসায়ী মো. সাহাবুদ্দিন জানান, প্রতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলা থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শুঁটকি সংগ্রহ করেন তিনি। এসব শুঁটকি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের পাশাপাশি কিছু পরিমান ভারতে রপ্তানি করেন। এর মধ্যে সিলভার কাপের শুঁটকি দেশের বাজারে সরবরাহ করা হয় এবং পুঁটি ভারতে রপ্তানি করেন। সাতক্ষীরায় যে পরিমাণ মিঠাপানির মাছ উৎপাদন হয়, তার একটি অংশ থেকে উৎপাদন হয় শুঁটকি। সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, মিঠাপানির শুঁটকি মাছ উৎপাদনে সম্ভাবনাময় জেলা সাতক্ষীরা। বছরে লক্ষাধিক টন সাদা মাছের শুঁটকি উৎপাদন হয় উপকূলীয় এ জেলায়, যা স্থানীয়দের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহের পাশাপাশি রপ্তানি হয় ভারতে। গত তিন-চার বছর ধরে জেলায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ব্যবসায়ী মিঠাপানির মাছ দিয়ে শুঁটকি তৈরি করছেন। তবে এ বিষয়ে আমার দপ্তরে সরকারিভাবে কোনো তথ্য বা পরিসংখ্যান নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, শুঁটকি উৎপাদনে কৃষক বা ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে এ জেলায় বছরে বিপুল পরিমাণ শুঁটকি মাছ উৎপাদন করা সম্ভব, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা যাবে।