এলাকাবাসী মোঃ সাইফুল ইসলাম আকাশ নিজস্ব প্রতিবেদক,ভোলা: ভোলার বোরহানউদ্দিনে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ৩৫,আতঙ্কে এলাকাবাসী। বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজার,পক্ষিয়া ইউনিয়ন,কাচিয়া ও টগবী ইউনিয়নে পাগলা কুকুরের কামড়ে অনেক মানুষের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ১০ জন,শুক্রবার এক দিনে কুকুরের কামড়ে ১৫ জন সহ উপজেলায় মোট ৩৫ জন আহত হয়েছে তবে এর মধ্যে পক্ষিয়া ইউনিয়নে ১০-১২ জন শিশু সহ সবচাইতে বেশি আক্রমনের শিকার হয়েছেন,এদের মধ্যে অনেকেই ভোলা সদর হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। এদিকে বেওয়ারিশ এসব কুকুর নিধনে কোনো উদ্যোগ না থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,পক্ষিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড,টগবী ও কাচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে একের পর এক মানুষকে পাগলা কুকুর কামড় দেয়ায় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহির ফয়সাল জানান,বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ২০-২৫ জন কুকুরে কামড়ে রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে,এদের মধ্য বেশিরভাগ ছিল শিশু,তিনি বলেন পাগলা কুকুর গুলোকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করলে হয়ত এর প্রতিরোধ সম্ভব যে কোন মূল্যই কুকুরের আক্রমন নিয়ন্ত্রণ করার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কুকুরে কামড়ে আহতদের রেবিক্স ডিসি ইনজেকশন দিতে হয় এবং একমাসে মোট পাঁচ ডোজ ইনজেকশন দিতে হবে বলে ও জানান এই চিকিৎসক। স্থানীয় বোরহানগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী মাহাবুবু আলম জানান,এলাকায় দলবদ্ধ কুকুর দৌড়াদৌড়ি করছে। কুকুরের উৎপাত বেড়েছে।আমার দেখা শিশুসহ ১২-১৩ জনকে কুকুরে কামড়ে আহত করেছে। অন্যদিকে উপজেলা সড়কের পথচারীরা জানান, উপজেলা সড়কে দলবদ্ধ কুকুর রাস্তায় শুয়ে থাকে। রাতে বাসায় যাওয়ার সময় ওই কুকুর গুলো মানুষকে ধাওয়া করে কামড় দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে কুকুর আতংকে রয়েছে পৌর এলাকার মানুষ। কুকুরের কামড়ে আহত হওয়া বশির,রাসেল,মহিন,কামাল,সুজন বলেন, কুকুরে কামড়ের পর তারা ভ্যাকসিনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান,প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন এখনো যন্ত্রনা হচ্ছে। এদিকে পক্ষিয়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ বছরের এক শিশুকে কামড়ে মারাত্মক ভাবে যখম করেছে বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার পরে অবস্থার অবনতি হলে আজ তাকে বরিশাল স্থানান্তর করা হয়েছে। ভুক্তভোগী আবদুল মান্নান এর ছেলে শাকিল বলেন, আমার বাবা বাইরে হাঁটতে বের হয়েছিলেন। হঠাৎ কুকুর এসে তার পায়ে কামড় দেয়। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তাকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী কায়সার আহমেদ বলেন, আমি রাতের বেলা বাসায় যাচ্ছিলাম। তখন পেছন থেকে একটি কুকুর এসে আমার পায়ে কামড় দেয়। আমি ফার্মেসি থেকে ইনজেকশন নিয়েছি। বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ নিরুপম সরকার সোহাগ বলেন,কুকুরের কামড়ে আহতদের মধ্য চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন ১৬জন,অনেকেই আবার চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামান বলেন,কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অনেকেই আহত হয়েছে,আমি জেলা প্রশাসক মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন,বোরহানউদ্দিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অনেকেই আহত হয়েছেন বিষয়টি শুনেই ভোলা জেলা সিভিল সার্জন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,পৌরসভার মেয়র সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কুকুর নিধনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার যাতে কোন সমস্যা না হয় সে দিকে তদারকি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।