মোঃ শরিফুল ইসলাম লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
লালপুরের ৩৩ নং বিলমাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের জায়গা প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় দখল করে রেখেছে তার ভাই ফলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অশংকা করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ১৮৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩৩ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নিজস্ব জমি রয়েছে ৩৮ শতাংশ যার দাগ নং ৩৭৭ ও ৩৭৮ ভবন রয়েছে ৪ টি। এ ভবন ৪ টির অবস্থান রয়েছে সরকারের ১ নং খতিয়ানের ৩৭৬ ও ৩৮০ নং দাগ, ব্যাক্তি মালিকানার ৩৭৯ দাগ ও বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে ।
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত পূর্ব দুয়ারি ভবনটির আংশিক সরকারের ৩৮০ নং দাগে রয়েছে , নব্বই দশকে নির্মিত পূর্ব দুয়ারি ভবনটি আংশিক ৩৭৬ নং দাগে, উত্তর দুয়ারি নতুন ভবনটির অর্ধেক রয়েছে ব্যাক্তি মালিকানার ৩৭৯ নং দাগে। ওয়াস ব্লকটির আংশিক রয়েছে হাটের জমিতে।
গত (১৯ নভেম্বর) জায়গাটি দখলমুক্ত করে এলাকাবাসী জন্য উন্মুক্তের দাবিতে জেলা প্রসাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের পরিবেশ মানসম্মত রাখতে সরকারের খাস জমি ৩৭৬ ও ৩৮০ নং দাগ ও বিলমাড়ীয়া বাজারের জমির আংশিক সহ ব্যাক্তি মালিকানার জমি বিদ্যালয়ের দখলে আছে। গত বছরের জানুয়ারিতে স্কুলের সীমানার মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা ইয়াসমিনের ভাই ফজলুর রহমান একটি কড়ই গাছ কেটে নিয়ে নিজেদের জমি দাবি করে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করা হলেও কোন কর্ণপাত করেনি কর্মকর্তারা।
বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের বরাদ্দ আসার পর প্রধান শিক্ষকের ভাইয়েরা সরকারি জায়গা নিজেদের দাবি করে দখল নেয়ার চেষ্টা করছে।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লাল মোহাম্মদ লালু বলেন স্কুল সরকারি, জায়গা সরকরি আছে স্কুলের দখলে, এ জায়গা হেড মাষ্টারের ভাইয়েরা নিজেদের দাবি মেনে নেয়া যায়না।
৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লিব্বাছ আলী বলেন সরকারি জায়গা স্কুলের দখলে আছে, স্কুল দখলে রাখতে না পারলে তা জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে রাখতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
সাবেক ইউপি সদস্য মোমিনুল ইসলাম বলেন, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বাবু অনিল কুমার সরকার ও দেলবার হোসেন কর্মরত থাকা অবস্থায় বিদ্যালয়ের দখলীয় নাগশোষা মৌজার খতিয়ান নং ১ , দাগ নং ৩৭৬ ও ৩৮০ নং জমি প্রভাবশালীরা দখল করে নিতে অস্থায়ী দোকান ঘর নির্মাণ করেছিল। স্থানীয় লোকজন ও তৎকালীন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের প্রয়োজনে দখল মুক্ত করা হয়। বর্তমান প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন রয়েছে সেই জায়গা সহ তার ভাইদের দখল নিতে নানা চেষ্টা করছে।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আওলাত হোসেন বিশ্বাস বলেন, আমরা ইউএনও এবং ডিসি মহোদয়ের নিকট আবেদন করেছি সরজমিনে তদন্ত পূর্বক বিদ্যালয়ের দখলী জায়গা রক্ষা করে শিক্ষার পরিবেশ ও কচিকাঁচাদের খেলাধুলা মাঠ ব্যবহারের ব্যাবস্থা ও প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা ইয়াসমিনের বদলীর ব্যবস্থার দাবি করছি।
প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা ইয়াসমিন বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যা বলবেন সেই ভাবে কাজ করবো, তবে আমি বিদ্যালয়ের পক্ষে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা: তায়েজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের দখলি জমি কিভাবে প্রধান শিক্ষকের ভাই দখল করতে আসে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমির বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
৩৭৬ ও ৩৮০ নং দাগ দখলকারীরা বন্দোবস্ত আছে বলে দাবি করলেও বিলমাড়ীয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র সূত্রধর বলেন উক্ত জায়গাটি কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া নাই
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।