স্বপন কুমার রায়, খুলনা ব্যুরো প্রধান: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশে মানবাধিকার বলে কিছু ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (ডিসেম্বর ১০) বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পরিবারের ১৮ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। দায়মুক্তি অধ্যাদেশ জারি করে আমাদের স্বজনদের হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে যাতে কেউ হত্যাকারীদের বিচার করতে না পারে। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের আগে আমরা এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মামলা করতে পারিনি।
‘সরকার গঠনের পর সেই কালো আইন বাতিল করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরাই প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এরপর থেকে আমরা সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারের ব্যবস্থা করেছি। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে বিশ্বের শোষিত-নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘সবার জন্য মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শেখ হাসিনা সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ৭৫ বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের আহ্বান- ‘Together, let’s rejuvenate the Universal Declaration of Human Rights, demonstrate how it can meet the needs of our time and advance its promise of freedom, equality and justice for all’ এর প্রতিও পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষকে হাজার বছরের শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্ত করতে সারা জীবন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। বঙ্গবন্ধু এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে প্রতিটি মানুষের মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা থাকবে। এ অঞ্চলের জনগণকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য তিনি বারবার কারারুদ্ধ করেছেন। কিন্তু তার সঙ্গেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ সংগ্রাম, অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতা লাভের মাত্র নয় মাসের মধ্যেই তিনি দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার দলিল হিসেবে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন। সংবিধানের তৃতীয় ভাগে বর্ণিত মৌলিক মানবাধিকারসমূহ লঙ্ঘিত হলে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে প্রতিকার প্রদানের ব্যবস্থা রেখেছেন।