স্বপন কুমার রায়, খুলনা ব্যুরো প্রধান: চারিদিকে শীতের আমেজ। সুন্দর সুন্দর কেক, জুজুলস, মার্শম্যালোতে ভরে গিয়েছে বাজার। আলোর চাদরে মুড়েছে চার্চ, রাস্তা, রেস্তোরা। অজানা সান্টাক্লজের কাছে গিফ্ট পাওয়ার আসায় দিন গুণছে কচিকাচারা। শহর ঢেকেছে ‘বড়দিনের’ আমাজে। চারিদিকে ‘বড়দিন’ ‘বড়দিন’ রব। শহরে যে’কটা পর্যটন স্থল রয়েছে সব জায়গাতেই প্রায় সান্টা সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেউ না কেউ। ক্রিসমাসকে বড়দিন নামেই চেনেন বেশিরভাগ। কিন্তু কেন এই দিন বড়দিন হল তার তাৎপর্য বেশিরভাগেরই অজানা। তবে কী এই দিনে সূর্য সবচেয়ে দেরিতে ডোবে? এমনই প্রশ্ন ঘুরপাক খায় সকলের মনে।
যিশুর জন্মদিন কেউ জানে না। বাইবেলে যীশুখ্রিষ্টের জন্মের নির্দিষ্ট কোনও তারিখ দেওয়া নেই। কিন্তু ৩৩৬ সাল নাগাদ থেকে এটি যিশুর জন্মদিন হিসাবেই নথিভুক্ত করেন রোমানরা। তারপর থেকেই এ দিনে পালিত হয় ক্রিসমাস। বেথেলেহেম শহরের এক আস্তাবলে পিতা জোসেফ ও কুমারী মাতা মেরির কোল আলো করো জন্ম নেন যিশুখ্রিষ্ট। ‘এই দিন থেকে ঠিক ৯ মাস আগে যিশুকে গর্ভে ধরেন মাতা মেরি।’ এমন মনে করেই এই দিনকেই ক্রিসমাস হিসাবে স্বিকৃতি দেওয়া হয়।
বিশ্বের প্রিটা কোণায় ধুমধাম করে এদিন উদযাপন করেন খ্রীষ্টধর্মীয়রা। তবে শুধু খ্রিষ্টানরা বললে ভুলই হবে, ক্রিসমাস নিয়ে কম উৎসাহ নেই অন্যান্য ধর্মের মানুষদেরও। রঙ-বেরঙের কেক, চকোলেট, আলো দিয়ে আনন্দের সঙ্গে বড়দিন পালন করেন আট থেকে আশি। এবার আসা যাক কেন এদিন ‘বড়দিন’ তার তাৎপর্য।
এদিন সবচেয়ে দেরিতে সূর্য ডোবে বলে একে ‘বড়দিন’ বলা হয় না। শীতের অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক হারে প্রাকৃতিক নিয়মেই সূর্য ডোবে এদিন। ‘বড়দিন’ বলতে বিশেষ দিন বা ইংরেজিতে বলেতে গেলে ‘দি গ্রেট ডে’।
‘লঙ ডে’ নয় বরং ‘গ্রেট ডে’ হিসাবেই ২৫ ডিসেম্বরকে বড়দিন বলা হয়। যিশুর জন্মদিনটা খ্রীষ্টধর্মীয়দের কাছে শ্রেষ্ঠ দিন হিসাবে বিবেচিত তাই এদিনকে বাংলায় বড়দিন বলা হয়।
তবে কেন ক্রিসমাসকে ‘বড়দিন’ বলা হয় ভারতে? ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ইংরেজ শাসনকালে ব্রিটিশরা এইদিনকে বিশেষ বোঝানোর জন্য একে হিন্দিতে ‘বড়া দিন’ বলতো। ভারতীয়রাও যাতে এই দিনকে গুরুত্ব দেয় এবং বিশেষ দিন হিসাবে ধরে তাই ভারতীয় ভাষাতেই এই উৎসবকে ‘বড়া দিন’ বলতেন ইংরেজরা। সেই বড়াদিনই বদলে গিয়েছে বড়দিন-এ। তাই সূর্য ডোবার নিরিখে নয়, গুরুত্বের নিরিখেই এদিনকে বড়দিন বলেন আবালবৃদ্ধবনিতারা।