সরকারি চাকরিজীবীদের সবার সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়। তবে কতদিনের মধ্যে হিসাব জমা দিতে হবে তা উল্লেখ করা হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
এতে বলা হয়েছে, ‘সকল সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’
সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। আজ রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে, এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন কোন প্রক্রিয়ায়, কত দিনের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে, সেটি শিগগিরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সভা করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে চাকরিতে প্রবেশের সময় স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা দিতে হয়। এরপর পাঁচ বছর অন্তর সম্পদের হ্রাস-বৃদ্ধির বিবরণী নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে জমা দেওয়ার নিয়ম। দুর্নীতি রোধ এবং চাকরিজীবীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে আচরণবিধিমালায় এমন নিয়ম থাকলেও কাগজের এই নিয়ম মানা হয় না বললেই চলে। এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একাধিকবার চিঠি দিলেও অগ্রগতি হয়নি।
সরকারি চাকরিজীবীদের একটি অংশের মধ্যে দুর্নীতির প্রবণতা আছে। এ অবস্থায় তাঁদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার পরামর্শ এসেছে। এ জন্য প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীর সম্পদ বিবরণী সরকারের কাছে জমা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ রকম পরিস্থিতিতে আলোচনা হয়েছিল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিবছরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আয়কর বিবরণী জমা দেন, যেখানে সম্পদের বিবরণীও উল্লেখ করার বিধান রয়েছে। তাই আলাদা করে পাঁচ বছর পরপর সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার চেয়ে সেটির একটি অনুলিপি বা আলাদা ফরমে জমা দিলেই হবে কি না, সেই আলোচনাও হয়েছিল। এ জন্য বিদ্যমান বিধিমালা সংশোধনেরও উদ্যোগ নিয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এখন অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করার পর বিচার বিভাগীয় সব কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের দেশে-বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের হিসাব বিবরণী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।