মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ সুন্দরবনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল থেকে সুন্দরবনের দুবলার চর আলোর কোল নামক স্থানে সমবেত হতে শুরু করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যার্থীরা। এদিন রাত থেকে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আগামী শনিবার সকাল পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। এরইমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা করেছে বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে পুণ্যার্থীরা দুবলার চরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। এবার রাস পূজা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে কোনো প্রকার মেলা হবে না। সন্ধ্যার মধ্যে বেশিরভাগ পুণ্যার্থী দুবলায় পৌঁছে যাবে। রাতে বিশ্রাম ও অনানুষ্ঠানিক পূজা আর্চনা করবেন। পুণ্যার্থীরা রাতে জলযানে (লঞ্জ, ট্রলার ও নৌকা) অবস্থান করবেন। আবার শুক্রবার সকালে চরে ঘোরাঘুরি ও সন্ধ্যায় মূল মন্দিরে আনুষ্ঠানিক রাস পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় ভক্ত ও পুণ্যার্থীদের কোনো প্রকার মানত বা বিশেষ কোনো কাজ থাকলে তারা সেগুলো সম্পন্ন করবেন। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে পুণ্যস্নানের মাধ্যমে রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। এর পরেই লঞ্চ, ট্রলার ও নৌকা যোগে বাড়ি ফিরবেন ভক্তরা।
এদিকে রাস উৎসবকে ঘিরে যাতে অপরাধী চক্র কোনো অপরাধ সংগঠিত করতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌ পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম।
তিনি বলেন, রাস উৎসব ঘিরে আমরা সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সকল নিয়ম মেনেই পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের বনে প্রবেশ করতে হবে। কোনো পুণ্যার্থী সিঙ্গেল ইউজ (একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয়) এমন প্লাস্টিক নিয়ে বনে প্রবেশ করতে পারবে না। রান্নার জন্য জ্বালানী নিয়ে যেতে হবে, কোনো ভাবেই বনের অভ্যন্তরের কোনো গাছ কাটতে পারবে না। বনের অভ্যন্তরে থাকাকালীন কোনো বন্য প্রাণী শিকার করতে পারবে না। যদি কেউ শিকারের মত অপরাধের সাথে যুক্ত হয়, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। বনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে, তিনি তাৎক্ষনিকভাবে শিকারীদের সাজা প্রদান করবেন।
রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু শন্তু বলেন, রাস পূজা উপলক্ষে এবার মেলা হচ্ছে না। শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বনে যাচ্ছেন। পূজা আর্চনা ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমরা শনিবার ফিরে আসব। প্রতিটি লঞ্চ, ট্রলার ও যানবাহনে পালনীয় ও বর্জনীয় নির্দেশনা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে বন বিভাগের নিয়মকানুন মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে। আশাকরি শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব শেষ করতে পারব।