রাম বসাক,শাহজাদপুর,সিরাজগঞ্জঃ খেজুর রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের গাছিরা। গ্রামীণ জনপদে শীতের আগমনী বার্তায় খেজুর রস সংগ্রহের প্রস্তুতি হিসেবে গাছের ডাল ও শাখা-প্রশাখা পরিষ্কার করছেন গাছিরা। এমনই দৃশ্য দেখা গেছে।
জানা গেছে, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ভালো করে পরিষ্কার করে সাদা অংশ কেটে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। পরবর্তীতে সাদা অংশ আবারও কেটে নলি লাগিয়ে তাতে ছোট-বড় বাসন বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়।
কায়েমপুর ইউনিয়নের বনগ্রামের গাছি রওশন আলী জানান, সাধারণত কার্তিক মাসে রস সংগ্রহের জন্য গাছগুলো প্রস্তুত করতে হয়। তবে শীতের আগমনের জন্য এবার একটু আগেই গাছ প্রস্তুত করছি। একটা গাছকে ডাল পালা কেটে প্রস্তুত করতে কয়েকদিন সময় লাগে। রস সংগ্রহের জন্য সাধারণত মাটির হাড়ি ব্যবহার করা হয় এবং হাড়ির ধারণ ক্ষমতা ৬ থেকে ১০ লিটারের মত হয়। রসকে ভালো রাখার জন্য হাড়ির ভিতরে চুনের প্রলেপ দেওয়া হয়। তবে যে গাছের কাঁচা রস খাওয়া হয়, সে গাছের হাড়িতে চুন দেওয়া হয় না। তিনি আরও জানান, একটা গাছ থেকে দুই-তিন মাস রস পাওয়া যায়। গাছ ভেদে প্রতিদিন ১ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত রস পাওয়া যায়। গাছ থেকে রস সংগ্রহের একটা নিয়ম আছে। প্রথম ৩ দিন রস সংগ্রহের পর পরবর্তী ৩ দিন গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা যাবে না। বিকেল ৩টা থেকে রস সংগ্রহের
জন্য গাছে গাছে হাড়ি বাঁধা হয়। পরদিন কুয়াশা ঘেরা ভোররাত থেকেই শুরু হয় রস সংগ্রহের কাজ।
খেজুর রস সংগ্রহকারী অপর গাছি মজিবর জানান, এখন আর বেশি গাছ পাওয়া যায় না। একেকজন ২০ থেকে ৩০টির মত গাছ থেকে রস করে। এর মধ্যে দুই একজনের নিজের কিছু গাছ থাকলেও বাকি সবারই অন্যের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিটি গাছের জন্য গাছের মালিককে দিতে হবে ৭-৮ কেজি লালি গুড় অথবা ১ হাজার টাকা করে।
শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে,
উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় খেজুর গাছ রয়েছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোনো পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকেরা গুড় উৎপাদন করে আরো বেশি লাভবান হবে।