আরিফুজ্জামান চাকলাদারঃ ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় সাবেক খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এস এ কে আজাদ সদ্য অপসারিত পৌর মেয়র আলী আকসাদ ঝন্টু জালিয়াতির ও প্রতারণা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে আলফাডাঙ্গা পৌর বাজারের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখত বক্তব্য পাঠে বলেন – আলফাডাঙ্গায় এস এ কে আজাদ গত ৪ জানুয়ারি একটি সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, মনগড়া বক্তব্য দেয়। সামাজিক ভাবে হেয় ও কু-মতলবে সংবাদ সম্মেলনে বানোয়াট, বিব্রতকর ও মানহীনকর বক্তব্য দেন।
আমি মেয়র হওয়ার পরে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেন ও বিভিন্ন সময় অর্থ লেনদেন করেন। তিনি অবসরে পর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পৌর ৩.৭৫ শতক জমি ১ কোটি টাকা মূল্যে বিক্রয়ের প্রস্তাব দেন। এত টাকা না থাকায় নগদ ২৫ লাখ টাকা ও পরবর্তীতে ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধের আমার স্ত্রী মাকসুদা সুলতান পপির নামে জমিটি রেজিস্ট্রি করে দেন। এসময় ৭৫ লাখ টাকার একটি চেক লিখে দেই। ২০২৪ সালের জুলাই মাসের ২০ তারিখে ৭৫ লাখ টাকা পরিশোধ করি। কিন্তু চেক ফেরত না দিয়ে বলেন চেকটি ঢাকায় রয়েছে আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখো আমি দুদিন পর তোমার চেক ফেরত দিবো। এসময় তিনি ঢাকার শ্যামলীতে একটি বহুতল ভবনের ২ তলার ৪ টি ইউনিট ও গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলাধীন পিঙ্গুলিয়া মৌজায় ৫১ শতক জমি ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা দামে বিক্রির প্রস্তাব করেন। এজমির বায়না স্বরূপ আমি তাকে নগদ ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেই।ঐ টাকার জামানত হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, শ্যামলী শাখার তার নামের হিসাব নং-২০৫০২০৯০২০১১৮২৮০০এ থেকে চেক নম্বর এম সি এম-৯৬৬৪৮৬৩এর মাধ্যমে একটি চেক প্রদান করেন। আমি চেক টি জামানত হিসেবে রেখে দেই।
নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও জমি লেখে দেন না। জমি লেখার কথা বললেই- তিনি নানা বাহানায় সময়ক্ষেপণ করেন। সেই সাথে আমার পূর্বের ৭৫ লাখ টাকার চেক ফেরত দেন না।
লোক মারফত জানতে পারি সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা একজন দূর্নীতিবাজ, প্রতারক, ঠকবাজ, লোভী মানুষ। আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করছেন। তিনি আমার দেওয়া চেক নিয়ে ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রতারণা করতে পারেন এ বিষয় বুঝতে পেরে আমি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করে হিসাবটি স্টপ পেমেন্ট করাই এবং বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই কিন্তু তিনি নোটিশের জবাব বা চেকটি ফেরত না দিলে চেকটি উদ্ধারে প্যানাল কোডের ৯৮ ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলাটি বর্তমানে চলমান রয়েছে।
একই সাথে ঢাকা ও কাশিয়ানীর জমি লেখে না দেওয়ায় আমার বায়না দেওয়া টাকার বিপরীতে তার দেওয়া ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার চেকটি রূপালী ব্যাংক, আলফাডাঙ্গা শাখায় আমার নিজ নামীয় হিসাব নম্বরে টাকা সংগ্রহের জন্য জমা দেই।তার হিসাব নাম্বরে টাকা না থাকায় চেকটি ফেরত আসে। পরবর্তীতে চেকটি রাজধানীর শ্যামলিতে অবস্থিত ইসলামি ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিলেও অপর্যাপ্ত তহবিল মর্মে সনদ দিয়ে চেকটি ফেরত দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক।
আমার সাথেই প্রতারণা করেননি তার আপন সন্তানদের সাথেও প্রতারণা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করেছেন। সাবেক এই অবসর প্রাপ্ত খাদ্য পরিচালকের দ্বারা তার ঔরসজাত তিন সন্তান অত্যাচারিত ও হয়রানির শিকার হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে বাবার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। সে সময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ‘বাবার বিরুদ্ধে সন্তানের এ কি অভিযোগ’ শিরনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে নেট দুনিয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি করে।
সাবেক পরিচালক এস এ কে আজাদ যে একজন দূর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন, শঠ ব্যক্তি এটি তার সন্তানরাই সে সংবাদ সম্মেলন উল্লেখ করেছেন।
তিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে ভিত্তিহীন প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন- সাবেক কাউন্সিলর নুর ইসলাম, আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি এনায়েত হোসেন, তৌকির আহমেদ ডালিম, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান কদর, আরিফুর রহমান বাচ্চু প্রমুখ।