
রাজশাহী (পুঠিয়া) প্রতিনিধি: রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ধোপাপাড়া মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজের জমি ভাগবাটোয়ারা করে খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই কলেজের এক জন সহকারী লাইব্রেরীয়ান ও একজন কেরানীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিনে গেলে মেলেও এর সত্যতা। ১৯৯৬ সালে কলেজের কেরানী পদে নিয়োগ পান স্থানীয় আসলাম আলী নামের এক ব্যক্তি। একই সঙ্গে সহকারি লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ পায় শাবানা খাতুন নামের স্থানীয় আরেকজন আফসার আলী নামের এক প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী। তারপর থেকে ওই দুইজন কলেজের প্রায় ৭০ শতাংশ জমি ভাগ বাটোয়ারা করে খেতে থাকে। যা এখন অব্দি খেয়ে আসছেন। ওই জমি গুলো অন্যের নিকট টেন্ডার ও লাখ লাখ টাকা কট বন্ধক রেখে দিয়েছেন তারা। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কলেজ। অভিযোগ আছে শাবানা খাতুন তার স্বামী প্রধান শিক্ষক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ওই পদটিও বাগিয়ে নেয়সে। প্রায় দুই যুগ যাবত ওই কলেজের জমি জোর জবরদস্তি করে আসলেও কোন এক রহস্যজনক কারণে আওয়ামী লীগ ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও মুখ খুলছেন না কেউ। আওয়ামী লীগ আমলে চাপে পড়ে ওই দুই ব্যক্তি কলেজ ফান্ডে সর্বমোট জমা দিয়েছিলেন মাত্র ২৮ হাজার টাকা। কলেজটিতে বহু অধ্যক্ষ ও সভাপতি পরিবর্তন হলেও জমি উদ্ধার পদক্ষেপ নেয়নি কেউই। এসব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে, তাদের বিরুদ্ধে কেউই মুখ খোলার সাহস পায়নি। সাংবাদিকদের সাথে থাকা গোপন ক্যামেরায় বন্দি হয় এলাকার সাধারণ মানুষের সাথে কথোপকথন এর ভিডিও। স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, তাদের অনেককেই এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করায় তাদেরকে হুমকি ধমকিও দেয়া হয়েছিল। তাই প্রাণ রক্ষার্থে কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে পুঠিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা আখতার জাহান তিনি বলেন, আজকে এই প্রথম আমি একটা অভিযোগ পেলাম। এর আগে কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে আমাকে জানায়নি। কেউ এমন কাজ করে থাকলে বিশাল অন্যায় করেছে। আমি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এবিষয়ে অভিযুক্ত কেরানী আসলাম আলী বলেন, কলেজেকে জমে লিখে দেওয়া হয়েছে কিন্তু জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার আগ থেকেই বন্দোক দেওয়া ছিল। তাই ২৯ বছর ধরে আমার দখলেই আছে। অপর অভিযুক্ত শাবানা খাতুনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি তার ছেলেকে দিয়ে সাংবাদিকদের ম্যানেজার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ ফাতেমা বলেন, আমি এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নতুন যোগদান করেছি। আসলাম এবং শাবানাকে শ্রমের বিষয়টি নিয়ে নোটিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কলেজটির সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, এরা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে কলেজের জমি দখল করে আছে এ বিষয়ে শুনেছি। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। পুঠিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লায়লা আক্তার জাহান জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে রাজনৈতিক বিষয়ের কারণে প্রতিটি স্কুল-কলেজে একই অবস্থা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আ.ন.ম. মোফাখখারুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।