লিপন খান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
পূর্বরিকল্পিতভাবে হয়রানির করার অসৎ উদ্দেশ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে থেকে জামিন পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের তরুণ সাংবাদিক এম.আর রুবেল।
৪ এপ্রিল সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকা সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ বিচারক আল শামস জগলুল হোসেন তার জামিন মঞ্জুর করেন। এর আগে ২০২০ সালে ২৫ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল (জি আর) আদালত নং-২, কিশোরগঞ্জ থেকে জামিনে পান তিনি। মামলা দায়েরের দীর্ঘদিন পর সিআইডি কিশোরগঞ্জ, আদালতে চার্জশিট প্রদানের পর গত কয়েক মাস আগে মামলাটি ঢাকা সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে ট্রান্সফার হওয়ার বিষয়টি অবগত না থাকায় হাজিরা মিস হওয়ার ফলে গত ১৬ মার্চ ভৈরব থানায় গ্রেফতারী পরোয়ানা পাঠানো হয় আদালত থেকে। পরে গতকাল সোমবার সকালে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। সাংবাদিক এম আর রুবেলের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট রোকন রেজা শেখ, এডভোকেট শহীদুল্লাহ ও এডভোকেট মোর্শেদ। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল রাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হয়রানি করার অসৎ উদ্দেশ্যে ডাঃ বুলবুল আহমেদ বাদী হয়ে ভৈরব থানায় আইসিটি আইনের ২৯ ও ৩১ ধারার মামলা করার পরপরই ভৈরব থানা পুলিশ সাংবাদিক এম আর রুবেলকে তার ভাড়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে ২৫ এপ্রিল দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠায়। পরে ওইদিনই সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (জি আর) আদালত নং-২, কিশোরগঞ্জের বিজ্ঞ বিচারক সাংবাদিক এম.আর রুবেলকে জামিন দেন।
এবিষয়ে সাংবাদিক এম.আর রুবেল জানান, ডাক্তার বুলবুল আহমেদ সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে ২০১২ সালে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার থাকা কালে ভৈরব শহরের তার মালিকানাধীন মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সেই হাসপাতালের চেয়ারম্যান তিনি। ওই সময় হাসপাতালটির কোন লাইসেন্স না থাকলেও সাধারণ মানুষ ও রোগীদের সাথে প্রতারণার উদ্দেশ্যে অনৈতিক উপায়ে মানব সেবায় অবদান রাখায় একটি এ্যাওয়ার্ড নেন।
ওই এ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এমপি। (বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী) ওই অনুষ্ঠানে ডাঃ বুলবুল আহমেদ বিশেষ অতিথি আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের কাছ থেকে এ্যাওয়ার্ডটি গ্রহণ করলেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আইন প্রতিমন্ত্রীর ছবির সাথে নিজের ছবি কম্পিউটারে এডিট করে তিনি ভৈরবসহ কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য প্রচারে করেন। আমি তখন ভৈরব থেকে প্রকাশিত দৈনিক গৃহকোণ পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব থাকায় ডাঃ বুলবুল আহম্মদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের প্যাডে লিখিতসহ ওই প্রতিমন্ত্রীর সাথে এডিট করা ছবিটি তার এক কর্মচারী পত্রিকা অফিসে নিয়ে আসলে ওই এডিট করা ছবিটি দেখে আমার সন্দেহ হয়। তখন নিউজ রুমে ভূয়া ছবি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে আমি রাতেই এ্যাওয়ার্ড নেয়ার ছবি ও এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির রহস্যের সত্যতা জানতে অনুসন্ধান করে জানতে পারি অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে ডাঃ বুলবুল আহম্মদ এ্যাওয়ার্ড নেন একটি ঢাকার একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে এবং মন্ত্রীর সাথে ছবি এডিট করার বিষয়টি সত্যতা পেয়ে মুঠোফোনে ডাঃ বুলবুল আহম্মদের বক্তব্য নিতে চাইলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ রাখতে বলেন।এ প্রতারণার ঘটনায় দৈনিক গৃহকোণ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরদিন ডাক্তার বুলবুল আহম্মদ একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠায় অফিসে।
ওই প্রতিবাদের সত্যতা জানতে গিয়ে তার বিভিন্ন অনৈতিক বিষয় গুলো ধরা পরে এবং এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তির ছবির সিডি সংগ্রহ করে ভূয়া ছবি ও প্রকৃত ছবি নিয়ে প্রতিবাদ লিপির পয়েন্ট আউট করে বিস্তারিত নিউজ হওয়ার ঘটনাসহ তার বেসরকারি মা ও শিশু হাসপাতালে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া নার্স দিয়ে অপারেশন ও এনেস্থিসিয়া দিয়ে স্বাভাবিক রোগী মৃত্যুর একাধিক ঘটনায় বিভিন্ন সময় সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আমাকে হয়রানি করতে করোনা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ডিজিটাল মামলা দায়ে করে হয়রানি করছেন। তাই আমি হয়রানি মুলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করছি।