মোঃ কামাল হোসেন খাঁন,মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরে খেজুরের চাষ তেমন ভাবে কেউ না করলেও জঙ্গল, পতিত অনুর্বর জমিতে, পুকুরের পাড়ে, জমির আইলে, বাড়ি ও বাগানের চারিদিকে কিংবা রাস্তার পাশে অসংখ্য খেজুরের গাছ রয়েছে। বিশেষ করে জেলার আশরাফপুর, আমদহ, পশ্চিম মালশাদহ, মাইলমারী, নওপাড়া, ভোমরদহ, কাজীপুর, হাড়াভাঙ্গা, গোপালনগর, শ্যামপুর, ধানখোলা, বেলতলাপাড়া, হরিরামপুর, বাজিতপুর ও গোভীপুর এলাকায় নজরে পড়ার মতো। যদিও কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এ ঐতিহ্যবাহী গাছগুলো। শীতকালে খেজুর গাছের বিশেষ করে খেজুর রসের বেশ কদর থাকলেও সত্যিকার অর্থে কেউ যত্ন নেয়না এ গাছের। অথচ কতটা উপকারী এ গাছ একটু গভীরভাবে ভাবলেই পাওয়া যাবে। শীতকালে খেজুরের রস, রস থেকে পাকারস, রস দিয়ে পিঠা, গুড়, পাটালি। শুধু এগুলোই নয় খেজুরের পাতা দিয়ে তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী পাটি। যা বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদের নারীরা যুগ যুগ ধরে ব্যবহার করে আসছে। ধান শুকানো, বসা কিংবা ঘুমানোসহ বিয়ে ও যে কোন অনুষ্ঠানেও এ পাটি ব্যবহার করা হতো। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়াই আজ আর নজরে আসে না। তাছাড়া জৈষ্ঠ্যমাসে এসে জানান দিয়েছে নতুন রুপে কাঁচা-পাকা লাল আর হলুদের খেজুর নিয়ে। যা নজর কেড়েছে মেহেরপুরের সকল ধরনের, সকল বয়সী মানুষের। তারপরও মেহেরপুরের মানুষ এ ফলগুলোকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না।
শাঁস পাতলা, আঠি বড়, আর পাকা ফলের সংরক্ষণ ক্ষমতা খুবই কম হওয়ার কারণেই হয়তো বা খেতে পছন্দ করেনা। বড়রা না খেলেও অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা দেশীয় খেজুর এখন গ্রামের শিশু কিশোরদের জন্য কিন্তু স্বপ্ন। কখন গাছ থেকে নামিয়ে সরিষার তেল আর লবন লাগিয়ে পাকিয়ে তা ছোট পাত্র কিংবা বাটিতে নিয়ে সুমিষ্ট স্বাদ ও গন্ধের ফলটি রাস্তায় রাস্তায় কিংবা বাড়িতে সহপাঠীদের সাথে নিয়ে খাবে। তাইতো চলছে গ্রামের শিশু কিশোরদের ছুটোছুটি আর দৌড়াদৌড়ি করে গাছ থেকে খেজুর নামানো। কিন্তু আর ক’বছর তারা খেজুর গাছ থেকে তাদের কাঙ্ক্ষিত ফল সংগ্রহ করতে পারবে এটাও ভাবার বিষয় কারণ খেজুরের গাছ কর্তন করে ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারসহ বিভিন্ন কারনে কর্তন করায় জেলার প্রায় সকল গ্রামের খেজুর গাছ বিলুপ্তির পথে।