আসাদুজ্জামান জামাল,ভালুকা প্রতিনিধিঃ নির্বাচন কমিশন কৃর্তক ঘোষিত তপশিল অনুযায়ি আগামী ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসন্ন এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৫৬ ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) সংসদীয় আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দিয়েছেন ২০ জন। গত ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২১ নভেম্বর শেষ হয়েছে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা প্রদান কার্যক্রম।এখন সবাই অপেক্ষায় আছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভার সিদ্ধান্তের। কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন তা নিয়ে প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের মাঝে রয়েছে নানা গুঞ্জন।
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা আসনে এবার কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি। জোর আলোচনা চলছে হাট বাজার আর পাড়া-মহল্লার চা-স্টলগুলোতে। আলোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও। সবার মনে কৌতহল এবার কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি।
ভালুকা আসন ২০জন সম্ভাব্য প্রার্থী নৌকার মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। ইতোমধ্যে কোনো কোনো আসনের মনোনয়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। আগামী শনি কিংবা রবিবার ময়মনসিংহ বিভাগের মনোনয়ন দেওয়ার কথা স্থানীয় নেতাকর্মীদের মুখে মুখে ভাসছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেদের পছন্দের সম্ভাব্য প্রার্থীর পক্ষে মনোনয়ন পাওয়ার বিভিন্ন যুক্তি তর্ক দাঁড় করিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার কথাও জানাচ্ছেন।এবারের নির্বাচন ও মনোনয়ন বিষয়ে উপজেলার সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেক কর্মী-সমর্থকদের সাথে কথা বলে জানাযায়,তারা জানান নিজেদের সমর্থিত নেতার বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা। তাদের প্রার্থীই সেরা, তাদের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে বিজয় নিশ্চিত।
বর্তমান এমপি এক সমর্থক জানায়,আলহাজ্ব কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু এমপি প্রথমবার নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সাধারণ ভোটাররাও তার পক্ষে রয়েছে। এ কারণে আবার এমপি ধনু দলীয় মনোনয়ন ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব গোলাম মোস্তফার এক কর্মী জানান, গোলাম মোস্তফা উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালে এলাকায় রাস্তা-ঘাটসহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাছাড়া তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে তার গভীর সম্পর্কও রয়েছে। তৃণমূলের বেশির ভাগ ইউপি চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীরাই নেতা মোস্তফার অনুসারী। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চায় আগামী সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন যেনো তাকেই দেওয়া হয়। তাছাড়া অর্ধ শতাব্দি ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে পরীক্ষিত একজন রাজনীতিবিদ তিনি। তিনি উপজেলায় জনপ্রিয় একজন নেতা। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা কালেই প্রমাণ করেছেন, তিনিই যোগ্য ব্যক্তি। তাছাড়া তিনি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা জোরালো ভাবে প্রচার করে আসছেন তিনি। এবার মনোনয়ন পেলে বিজয় তারই হবে।
ময়মনসিংহের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি মনিরা সুলতানা মনি’র এক সমর্থক জানায়, ভালুকা আসনের সাবেক এমপি ভাষা সৈনিক মোস্তফা এম এ মতিনের কন্যা এমপি মনিরা সুলতানা মনি। তিনি ভালুকা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে দুইবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।তিনি ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। তার রয়েছে ক্লিন ইমেজ। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সংরক্ষিত আসনে এমপি নির্বাচিত করেন। এবার তিনি ভালুকা আসন থেকে সরাসরি নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।
অপরদিকে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব এম এ ওয়াহেদ দির্ঘদিন যাবৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ নানা সামাজিক কাজে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন তিনি।তার সমর্থিত কর্মীরা আশাবাদী মনোনয়ন পেলে নিশ্চিত জয়ী হবেন এম.এ ওয়াহেদ।এছাড়াও ভালুকা পৌরসভা থেকে ৩বারে নির্বাচিত বর্তমান মেয়র ডাঃ এ কে এম মেজবাহ উদ্দিন কাইয়ুম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবীণ নেতা এডভোকেট শওকত আলী,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডাঃ কেবিএম হাদিউজ্জামান সেলিম, জেলা আ’লীগের কোষাধ্যক্ষ হাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগন উত্তর-২৭ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি শাহাদাত ইসলাম চৌধুরী মিন্টু, ডেপুটি এ্যাটর্নী জেনারেল শাহ আশরাফুল হক জর্জ, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতা আসাদুজ্জামান বিপ্লব,সাবেক এমপি অধ্যাপক ডাঃ আমান উল্যাহর স্ত্রী ডাঃ সাইদা আখতার, বিপুল ভোটে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের ২বারে ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সেলিনা রশিদ,উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান খান রিপন,সাধারন সম্পাদক এজাদুল হক পারুল, ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন,এডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, মোহাম্মদ আদনান খান ও মো: শফিকুল ইসলাম খান।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এবার আওয়ামী লীগের অন্তত বেশ কয়েকজন নেতা মনোনয়ন পাওয়ার আশায় মাঠে নেমে আওয়ামী লীগের দলীয় নির্দশনা মতে শান্তি সমাবেশ, মিছিল ও শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে নেতার্কমীদের দিনরাত চলছে প্রচার প্রচারনা ও মটরসাইকেল শোডাউন ছিল লক্ষণীয়।
সম্ভাব্য এসব প্রার্থী সুযোগ পেলেই এলাকার মানুষের কাছে ছুটে গেছেন,করেছেন উঠান। এলাকার রাস্তাঘাট এবং বিভিন্ন বাজারসহ মোড়গুলোতে ছেয়ে দেওয়া হয়েছিল নেতাদের শুভেচ্ছা ব্যানার,ফেস্টুন ও পোস্টারে।
তবে শিল্পনগরী হিসেবে খ্যাত,আওয়ামীলীগের ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে চলছে প্রার্থী নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা কে হচ্ছেন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী, চায়ের দোকান থেকে পাড়া মহল্লায় চলছে নানা গুঞ্জন কে হচ্ছেন এই আসনের আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য। এখন থেকেই এই আসনের নির্বাচনীয় মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে।