মোঃ শরিফুল ইসলাম লালপুর, নাটোর প্রতিনিধিঃ কৃষিতে পড়াশোনা শেষ করে চাকুরীর পেছনে না ছুটে স্বপ্ন দেখতেন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। সেই স্বপ্ন পূরণে মৎস, গরুর খামারের পর এবার গড়ে তুলেছেন জৈব তৈরির কারখানা। ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরি করেই এখন হয়ে উঠেছেন একজন সফল উদ্যোক্তা। পরিশ্রমী এই উদ্যোক্তার নাম আব্দুল মোত্তালেব রায়হান। তার বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামে। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে তৈরি করেন কৃষি খামার।
তার কৃষি খামারে গরুর গবর ফেলে না দিয়ে সেখান থেকে পরিকল্পনা করেন জৈব সার তৈরির। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ১ একর জায়গা লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি ট্রাইকো কম্পোস্ট তৈরির কারখানা। এখন তার জৈব সার তৈরির কারখানায় নিয়মিত কাজ করেন অনন্ত ৩০ জন শ্রমিক। আব্দুল মোত্তালেব রায়হান বলেন, প্রথমে আমার গরুর খামারের গবর নাম মাত্র দামে বিক্রি করে দিতাম। তারপরই পরিকল্পনা করলাম গবরটা কাজে লাগাতে। সেখান থেকেই শুরু। এরপর বাণিজ্যিক ভাবে সার উৎপাদন শুরু করি। এখন এটা বাণিজ্যিক আকারে রূপ নিয়েছে। এছাড়া বিষমুক্ত খাবার উৎপাদন করতে জৈব সারের বিকল্প নেই।
কৃষিকাজে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানো দরকার। জৈব সারের ব্যাবহার বাড়াতে পারলে মানুষের রোগবালাই কমে যাবে। আমার এখানে প্রতিদিন গড়ে খামারে ৩/৪ টন ট্রাইকো কম্পোস্ট উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতিকেজি সার ১০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকি। উৎপাদিত বেশির ভাগ সার এলাকার সবজি চাষি, পেয়ারা বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ড্রাগন বাগান এবং বিশেষ করে আলুতে ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে এবং তারা নিয়ে যায় নিয়ে যায়। বাকি সার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, লালপুর- গোপালপুর সড়কের বুধিরামপুর রাস্তার বামপাশে আশার আলো জৈব সার কারখানা লেখা সাইনবোর্ড ঝুলছে। ভেতরে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ।
একদিকে গোবর ও অন্যন্য উপদান ঢেকে রেখে পচানো হচ্ছে। পরবর্তী কয়কটি ধাপে প্রস্তুত করা হচ্ছে ট্রাইকো কম্পোষ্ট। খামারে কাজ করছেন শরিফুল ইসলাম নামে এক শ্রমিক। তিনি বলেন, শুরু থেকেই আমি এখানে কাজ করি। দেড় বছর আগে এখানে সার উৎপাদন শুরু করেছে। আমার মতো আর অনন্ত ৩০ শ্রমিক এখানে কাজ করে। এখানে কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে আমার সংসার চলে। লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, জৈব সার পরিবেশবান্ধব। জৈব সার মাটির উর্বরতা বাড়ায়। ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। সারা দেশেই এখন রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা চলছে। এজন্য জৈব সার উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জৈব সার উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি পরামর্শ ও সহযোগীতা প্রদান করা হচ্ছে।