মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব ও সাশ্রয়ী ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। এতে রাসায়নিক সারের ব্যবহারের প্রবনতা যেমন কমছে, তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে ফসলের উৎপাদন খরচ। অন্যদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, সমগ্র ঠাকুরগাঁও জেলায় জৈব সারের ব্যবহার ও উৎপাদন ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন তাঁরা।
গত বছর ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ী ইউনিয়নের নতুন পাড়া এলাকার ১০-১৫ জন চাষী কেঁচো সংগ্রহ করে জৈব পদ্ধতিতে সার উৎপাদন শুরু করে। তাঁদের বিনা ম‚ল্যে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করেন ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষকদের উৎপাদিত সেই সার জমিতে ব্যবহার করে আশানুরুপ ফলন পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এতে আশপাশের কয়েক গ্রামের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
কৃষক শরিফুল ইসলাম, মাজেদুর রহমান, হামিদুর রহমান, রইস উদ্দীনসহ একাধিক কৃষক বলেন, সবজি সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোট সার প্রয়োগে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারে সেই ফলন পেতে চাষিদের গুনতে হয় তিন থেকে চার গুন টাকা।অন্যদিকে এ সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।
ঐ ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, মাঠপর্যায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ পরামর্শ ও আর্থিক সহায়তার মধ্য দিয়ে ১০টির বেশি কেঁচো সার উৎপানের প্রদর্শনী গড়ে উঠেছে এ এলাকায়। কৃষক-কৃষানীরা উৎপাদিত কেঁচো সার নিজের চাহিদা মিটিয়ে স্থানীয় বাজারেও বিক্রি করে আয় করছে। অনেক বেকার যুবকও কেঁচো কম্পোষ্ট সার উৎপাদন করে উপার্জনে নেমে পড়েছে। এজন্য সহজ শর্তে ঋন সহায়তার দাবি তাদের।
বেগুনবাড়ী নতুনপাড়া এলাকার কৃষক মোমিনুল ইসলাম জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারের ফলে ফলন বেড়েছে। তা ছাড়া নিজেই উৎপাদন করি বলে খরচও কমে গেছে। উৎপাদনের পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো ১০টাকা দরে বিক্রি করে বাড়তি আয় হচ্ছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, ন্যাশনাল এগ্রিকালচার টেকনোলজি প্রোগ্রাম এনএটিপি-২ এর আওতায় কৃষি বিভাগ কেঁচো সার উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা প্রয়োজনীয় সহায়তা করছেন। পরিবেশ বান্ধব এই সার মাটির স্বাস্থ্য রায় গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা রাখছে। মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে কৃষক কম খরচে সার পাচ্ছেন।