মোঃ কামাল হোসেন খাঁন মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের অন্তর গত কসবা ডিপিপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষ ও শিক্ষক সংকট থাকায় ক্লাসে পাঠদান করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে কখনও কখনও শিক্ষার্থীদের বাঁশঝাড়ের নিচে বসিয়ে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে কালবৈশাখী ঝড় ও বর্ষা মৌসুমে আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি দিতে হচ্ছে। শ্রেণি সংকট থাকায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস চলছে।
অবকাঠামোগত সমস্যার কারনে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এই কসবা ভি পি পি সরকারী বিদ্যালয়ের ৩৩ বছর অতিবাহিত হলেও সকল শিক্ষক ও বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে ২০১৩ সালে। করোনা পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেলেও বর্তমানে ১৪৯ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত ক্লাশ করে থাকে। (ছাত্র সংখ্যা-৭৭ জন ও ছাত্রী সংখ্যা-৭২ জন) থাকলেও স্কুল ভবন, বেঞ্চসহ নানা সমস্যা চলছে এ বিদ্যালয়টিতে।
শিক্ষক স্বল্পতার কারণে ঠিকমত ক্লাস নেয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। ৫ জন শিক্ষকের জায়গায় মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে কষ্ট করে ক্লাসে পাঠদান করানো হয়। ৪ জন নিবেদিতপ্রাণ দক্ষ মেধাসম্পন্ন শিক্ষক শিক্ষিকার প্রাণপণ চেষ্টায় প্রতি বছর ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পে বিল্ডিং পাওয়া যায়নি।
লেখাপড়ার পাশাপাশিসহ পাঠক্রমেও এ বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে। বিভিন্ন মহলে নানা দেন দরবার করেও স্কুল ভবন ,বেঞ্চ ও স্কুল বাউন্ডারীর ব্যবস্থা হয়নি। সরকারি ভাবে কোন প্রকার সহযোগিতা না পাওয়ায় নানা সমস্যায় জর্জরিত-জরাজীর্ণ হয়ে চলছে কসবা সরকারী ডিপিপি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। দিন দিন ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও শ্রেণীকক্ষ বৃদ্ধি না পাওয়ায় কোমলমতি শিশুদের গাছতলায় কখনও বা খোলা আকাশের নীচে রোদে পুড়ে ক্লাস করতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ঘটছে। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, বর্তমানে প্রচন্ড গরমের ফলে শ্রেণী কক্ষে ঠাসাঠাসি করে ক্লাস করা যাচ্ছে না। বেঞ্চ না থাকায় গাঁদাগাঁদি করে বসতে হয় আমাদের।
খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করতে গিয়ে শীতের সময় খুব শীত এবং গরমের সময় অনেক গরম ও রোদে অনেকে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কষ্টের বিষয়টি বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত স্কুলটিতে নতুন ভবন নিমার্ণ,অবকাঠামো তৈরি ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আনবে এমনটি প্রত্যাশা করেছেন এলাকাবাসী। কসবা ডিপিপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক (বকুল) জানান, স্থানীয় জনগণের চাহিদায় ৩৩ শতাংশ জমির উপর ১৯৮৯ সালে কসবা ডিপিপি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এলাকার শিক্ষানুরাগী মরহুম আব্দুল মান্নান, হাজী খেজমত আলী , ইছাহক আলী ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আফজালুল হক অজ পাড়াগ্রামে শিক্ষার আলো জ্বালতে বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন। নানা প্রতিকূলতাকে কাঁটিয়ে ২০০৩ সালে সরকারী ভাবে স্বল্প পরিসরে অবকাঠামো গড়ে উঠলেও বর্তমানে সেই বিল্ডিং এ অ্যাকুমোডেশন হচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস নিতে হয়।
কসবা ডিপিপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি কসবাসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোর শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। তিনি আরও জানান, নতুন ভবন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক, বেঞ্চ, সীমানা প্রাচীর দাবি করে ইতো মধ্যে শিক্ষা অফিসার, ইউএনও, জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ত্রাণ অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহজাহান রেজা বলেন,কসবা ডিপিপি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে অফিসে আমরা একটি ঙ পেয়েছি। এ বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে অবগত করা হবে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানম জানান,সরকারী বিদ্যালয়ে এমন সমস্যা থাকার কথা নয়। তারপরেও শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন করলে আমরা বিষয়টি পরিদর্শন করে দেখবো।