কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, দুর্ভোগে পানিবন্দী মানুষ
সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গত ৩ দিন ধরে পানিবন্দী জীবন যাপন করছেন উপজেলার রৌমারী, শৌলমারী, দাঁতভাঙা ও যাদুর চর ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা।
ঘর-বাড়ির পানি স্থায়ী হওয়ায় শুকনো খাবারের সংকটে পড়েছেন অনেক পরিবার। এ ছাড়া চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বানভাসীরা।
রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের যাদুর চর গ্রামের বন্যা কবলিত রহিমা বেগম বলেন, ৩ দিন ধরে ঘরের ভেতর পানি। রান্না করতে পারছি না। পানির কারণে নিজেরা ছেলে-মেয়ে নিয়ে সমস্যায় আছি। এ ছাড়া পালিত গরু-ছাগল নিয়েও বিপাকে পড়েছি আমরা।
দাঁতভাঙা ইউনিয়নের বেলাল হোসেন বলেন, হঠাৎ ভারতীয় পানি এসে আমার এখানকার নিচু এলাকাগুলো ডুবে গেছে। পানি দীর্ঘদিন থাকলে বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তবে পানি এখন নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণটা কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বন্যার পানিতে শাক-সবজি, মরিচ, কাউন, তিল, পাটসহ বিভিন্ন ফসলের খেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। উপজেলার সদর ইউনিয়নের কৃষক আজিজুল হক জানান, আমরা চরাঞ্চলে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু বন্যার পানিতে তলিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে।
উপজেলার ২১টি বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ অবস্থায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল্লা জানান, রৌমারী উপজেলার সবগুলো ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন-যাপন করছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিতদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, জরুরিভিত্তিতে বন্যা কবলিতদের জন্য ৩ লাখ টাকার শুকনো খাবার সরবরাহের কাজ চলছে। আরও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজানের পাহাড়ী ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টির পানিতে জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে রৌমারী উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তবে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পনি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও এখনো বিপৎসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।