মোঃ খলিলুর রহমান সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার মরিচ্চাপ খাল খননে নানা সমস্যায় জর্জারিত।খাল দখল করে তৈরি হয়েছে ইট ভাটা, আবাসন প্রকল্প। আবার খালেরর দু-ধার দখল করে গড়ে উঠেছে জনবসতি। পলি জমে ভরাট হওয়া খাল নকশা অনুযায়ী নেই। কিছু জায়গায় খাল ব্যক্তি মালিকানা জমির উপর দিয়ে বয়ে গেছে। পলি জমে ভরাট হওয়ার কারনে বছরে ছয় মাস এই খালের অববাহিকার মানুষকে পানি বন্ধি থাকতে হয়।
সরকার ২৯ কিলোমিটার মরিচ্চাপ খাল খননের জন্য ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে।
ইতিমধ্যে খাল খনন কাজ অনেক এগিয়ে গেছে। আগামি ৩০ জুনের মধ্যে খাল খনন কাজ শেষ হবে। আর স্থানীয়রা বলছে এই খাল খনন হলে তারা জলবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
জানা যায়, সাতক্ষীরা শহরের বাকাল মোড় থেকে আশাশুনি অভিমুখে খোলপেটুয়া নদী পর্যন্ত ২৯ কিলোমিটার মরিচ্চাপ খাল। পলি জমে এই খাল ভরাট হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় বছরে ৬ মাস এই এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতায় ভোগে। সরকার জলবদ্ধতার কবল থেকে রক্ষা পেতে এই খাল খননের জন্য ৬৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে জলবদ্ধতায় ভুগছে।
বর্ষা এলেই তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয় অন্য কোন জায়গায়। গরু, ছাগল পালন করতে পারে না। মাঠে ফসল হয় না। এবার খাল খনন হচ্ছে। খালের তলদেশ বেশ গভীর হচ্ছে। এই ভাবে মরিচ্চাপ খাল খনন হলে তারা জলবদ্ধতার হাত থেকে রেহায় পাবে।
খনন কাজে নিয়োজিত কামাল হোসেন, মিলন রহমান ও আক্তার জানান, এই খাল খনন করতে তাদের অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। পলি জমে খাল ভরাট হয়েছে আর নদীর চর দখল করে গড়ে উঠেছে আবাসন প্রকল্প। কিছু ভুমিদস্যু খাল দখল করে ইটভাটা তৈরি করেছে। আবার খালের দ’ুধার দখল করে ছিন্নমুল মানুষজন ঘনবসতি গড়ে তুলেছে।
বাকাল এলাকায় নকশা অনুযায়ী খাল নেই। খাল যে পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সেটা
ব্যক্তি মালিকানা জমি। এসব সরিয়ে খাল খনন দূর্বিসহ হয়ে পড়েছে। এমনকি খাল খনন করা মাটি রাখার জায়গা নেই।
ব্যাংদহা এলাকার নুরুল ইসলাম ও আব্দুর রউফ জানান, সরকারের দেওয়া আবাসন প্রকল্প রক্ষা করতে হয়েছে । এই আবাসন প্রকল্প এলাকায় খাল ঘুরিয়ে দিয়ে অন্য পাশ দিয়ে কাটতে হয়েছে ।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছে যতদুর সম্ভব খালের চর থেকে মানুষকে
সরিয়ে খনন কাজ শুরু হয়েছে। নকশা অনুযায়ী খাল না থাকায় কিছুটা জটিল হয়েছে।
যে ভাবে খাল বয়ে গেছে সেই ভাবে খনন কাজ চলছে । ইতিমধ্যে খননের কাজ ৮০ ভাগ
এগিয়ে গেছে। এই কাজের জন্য ২৫ কোট টাকা মুলধনে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ বরাদ্ধারে টাকা নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে।আর খাল খনন হলে
এই এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে ।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড -১ নির্বাহি প্রকৌশলী, আবুল খাযের জানান, তারা
পুরা মরিচ্চাপ খাল খনন করছে। এর সাথে সংযোগযুক্ত আর ১৪ খাল খনন করা হবে।
ইতিমধ্যে সংযোগযুক্ত ৪ টি খাল খনন করা হয়েছে। এই খাল খনন করা হলে সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি, দেবহাটা উপজেলা উপকৃত হবে । মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এগিয়ে যাবে।