এম এ হানিফ রানা,স্টাফ রিপোর্টারঃ ঈদ মোবারক। আজ পবিএ ঈদুল আজহা। বিভিন্ন দেশের মতো মুসলিম প্রধান বাংলাদেশেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, আনন্দ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা।
গাজীপুরেও যথাযথ ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে ঈদুল আজহা। গাজীপুরে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় গাজীপুরের ঐতিহাসিক রাজবাড়ী মাঠে বিশাল আয়োজনে। উক্ত জামাতে ইমামতি করেন গাজীপুরের কেন্দ্রীয় মসজিদের সম্মানিত খতিব আল্লামা মুফতি কামরুল ইসলাম নোমানী। রাজবাড়ী ঈদ জামাতে ঈদের নামাজ পড়েন গাজীপুর জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ আনিসুর রহমান। এছাড়াও আরো বিশিষ্ট জনেরা উপস্থিত ছিলেন ঈদ জামাতে।
পরে ঈদের নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করবেন সামর্থ্যবান মুসলমানরা। মুসলমানদের জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম আ:-এর ত্যাগের স্মৃতিবিজড়িত এ ঈদ। মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে নিজের প্রিয় বস্তুকে কোরবানি দেয়ার প্রস্তুতির শিক্ষাই এ ঈদের আদর্শ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দ্বিধাহীনভাবে তার কাছে আত্মসমর্পণ এবং তার নির্দেশ শর্তহীনভাবে মেনে নেয়াই হলো ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা। আল্লাহর রাহে পশু কোরবানি করে সেই ত্যাগের কথাকেই স্মরণ করা হয়।
ঈদুল আজহা হজরত ইবরাহিম আ: ও তার পুত্র হজরত ইসমাঈল আ:-এর সাথে সম্পর্কিত। হজরত ইবরাহিম আ: স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আসলে আল্লাহর পক্ষ থেকে এ আদেশ ছিল হজরত ইবরাহিম আ:-এর জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আল্লাহর নির্দেশে ইসমাঈলের পরিবর্তে কোরবানি হয় দুম্বা। সেই ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণে হজরত ইবরাহিম আ:-এর সুন্নত হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামী শরিয়তে। সামর্থ্যবানদের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব। আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করার পর আনন্দ থেকেই উদযাপিত হয় ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ। এ ছাড়াও ১১ ও ১২ তারিখ কোরবানি করা যায়।
ইসলামে কোরবানি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র কুরআনের সূরা কাউসারে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘অতএব আপনার পালন কর্তার উদ্দেশে নামাজ পড়–ন এবং কোরবানি করুন।’ সূরা হজে বলা হয়েছে ‘কোরবানি করা পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নির্দেশনা।’ কোরবানির মূল উদ্দেশ্যই তাকওয়া বা খোদাভীতি। এ প্রসঙ্গে কুরআনে বলা হয়েছে, ‘এগুলোর গোশত আমার কাছে পৌঁছায় না। কিন্তু তোমাদের তাকওয়া পৌঁছে যায়।’
রাসূল সা: বলেছেন, ‘ঈদুল আজহার দিন কোরবানির চেয়ে আর কোনো কাজ আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয় নয়।’ অন্যত্র বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকার পরও কোরবানি দিলো না সে যেন আমার ঈদগাহে না যায়।
সকলের মাঝে মানবতার সুখ বার্তা পৌঁছে দিক ঈদ। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে সুখের বার্তা পৌঁছে যাক প্রতিটা মানুষের মনে ও প্রানে।