সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে হতাশ বিক্রেতারা। চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন মাদরাসার কর্তৃপক্ষ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি বাজার ও চামড়ার আড়তে দাম না থাকায় হতাশ তারা। চামড়ার দাম না থাকায় স্থানীয় মাদরাসা ও এতিমখানা গুলোর আয় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এতে সংশ্লিষ্টদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গ্রাম থেকে একটি বড় গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় ও ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ২০ টাকায় কিনেছেন। কিন্তু সেই চামড়া আড়ত ও পাইকারি বাজারে আনার পর গরুর চামড়ার দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আর ছাগলের চামড়ার দাম ১০ টাকায় এসে ঠেকেছে। এতে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অপর দিকে উপজেলার একাধিক কওমি মাদারাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ কোরবানির চামড়া কালেকশন করলেও কাঙ্ক্ষিত দামে তা বিক্রি করতে পারছেন না।
রোববার (ঈদের দিন) সন্ধ্যায় ভূরুঙ্গামারী বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদা না থাকায় বিভিন্ন অজুহাতে দাম কম বলছেন আড়তদার ও পাইকাররা।
আব্দুল কাদের নামের এক ব্যক্তি জানান, কোরবানির গরুর চামড়া ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। ওই চামড়ার দাম কমপক্ষে দেড় হাজার টাকা হওয়া উচিৎ। রাশেদুজ্জামান নামের অপর কোরবানিদাতা জানান, এক লাখ টাকার গরুর চামড়ার দাম ৫০০ টাকাও বলছে না ক্রেতারা।
মনির নামের অপর এক কোরবানিদাতা জানান, গরুর চামরার দাম না থাকায় চামড়াটি একটি হাফেজিয়া মাদরাসায় দান করেছি।
পশ্চিম চাট গোপালপুর সিদ্দিকীয়া হাফেজিযা মাদরাসার সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, মাদরাসায় জমা হওয়া ৪টি গরুর চামড়া ১০০০ টাকায় বিক্রি করেছি।
মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী আক্কাস আলী জানান, পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে চামড়া কিনেছি। চামড়া কেনার পর শ্রমিক, লবণ, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে আরো ১৫০ থেকে ২০০ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে চামড়া প্রতি। পাইকাররা কেনা দামও বলছে না।
ভূরুঙ্গামারী বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মোজাম্মেল হক বলেন, গাভীর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। আর দামড়া(ষাঁড়) গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা।
আবুল কালাম নামের অপর একজন বলেন, ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। তিনি আরো জানান, ভূরুঙ্গামারীতে চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি নেই। এছাড়া করোনার প্রভাব ও ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে গত বছরের বকেয়া টাকা না পাওয়ায় অনেক চামড়া ব্যবসায়ী এবার তেমন একটা চামড়া কিনছেন না।