স্বপন কুমার রায়,খুলনা ব্যুরো প্রধানঃসীমান্তে আরাকান আর্মি গুলি ছুড়েছে, দাবি মিয়ানমারের এমনটায় জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। তিনি বলেন, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তে মিয়ানমারের গোলাগুলির বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট সব এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সরকার। পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও কোস্টগার্ডকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এ মুহূর্তে সীমান্তে সেনা মোতায়েন নিয়ে কিছু ভাবছে না সরকার। রোববার (১৮ই সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আজ আমরা মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদলিপি দিয়েছি। সীমান্তে যেসব ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না হয় এবং আমরা এটাও বলেছি, এটা আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনারা কীভাবে সমাধান করবেন, সেটা আপনাদের চিন্তা করতে হবে। কিন্তু মিয়ানমারের গোলা যেন আমাদের ভূখণ্ডে না আসে। সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের না, তাদের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল শান্তিকামী রাষ্ট্র। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে অনেক দিন ধরে এসব সহ্য করে যাচ্ছি। আমরা তাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের সমস্যা সমাধান করুন, যাতে করে আমাদের এখানে কোনও রক্তারক্তি না হয়, কোনও প্রাণ না যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজ একটি উচ্চ পর্যায়ের মিটিং করেছি সবাইকে নিয়ে। বাংলাদেশের যত এজেন্সি আছে, তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি এবং আমরা বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে বলে দিয়েছি, বর্ডারে সজাগ থাকতে। রি-এনফোর্সমেন্ট যেখানে যতটুকু লাগে, করবে। সাগর দিয়ে বা অন্য জায়গা দিয়ে কোনও রোহিঙ্গা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করেছি। তবে আমাদের দেশেরও কিছু লোক আছে, তারা আগেরবার জড়িত ছিল, সেটা যেন এবার না হয়। এবার আমরা আমাদের যত এজেন্সি আছে সবাইকে রিকুয়েস্ট করেছি।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আপনারা হয়তো বলবেন, বারবার আপনারা প্রতিবাদলিপি দেন কিন্তু কিছু হয় না, এটাতে আমাদের করার কিছু নেই। কারণ আমরা তো দায়িত্বশীল একটি রাষ্ট্র। সে হিসেবে প্রতিবেশীকে যা করা যায়, নিয়মমাফিক তা আমরা করছি। আমাদের কথাবার্তায় কোনও রকম দুর্বলতা বা অনেকে নতজানু বলে থাকে সে ধরনের কোনও কথাই নেই। আমরা শক্ত অবস্থান থেকে তাদের বলেছি।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের জবাব কী ছিল- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত যেটা বলেছেন, তথ্যগুলো তিনি নেপিদোতে জানাবেন তাদের কর্তৃপক্ষকে, তারা যেন এর ওপর কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে পারে। রাষ্ট্রদূত সময় দিয়েই শুনেছেন। মর্টারশেল ও গোলাগুলি নিয়ে রাষ্ট্রদূতের একটি বক্তব্য আছে, এগুলো হয়তো আরাকান আর্মির গোলাগুলিতে হতে পারে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, আপনাদের দেশের ভেতর থেকে যা কিছু আসুক না কেন, সেটা আপনাদের দায়িত্ব। সেটা আপনারা দেখবেন। আমাদের এখানে যাতে কিছু না আসে, সেটা আপনারা নিশ্চিত করবেন। এটা করার জন্য যা কিছু করার দরকার আপনারা পদক্ষেপ নেবেন।