মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ হিমালয়ের কোলঘেষা জেলা ঠাকুরগাঁও। এ অঞ্চলে কয়েকদিন থেকে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু হওয়ায় শীতের আগমন ঘটেছে। বিকেল থেকেই হালকা কুয়াশা পড়া শুরু হয়ে সন্ধার পর কিছুটা বাড়ছে। রাত ৭-৮ টার দিকে মোটামুটি ভালই কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয় বিভিন্ন এলাকা। একদিকে শীতের আগমন অন্যদিকে কৃষকের নবান্ন উভয়ে মিলে বাঙ্গালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক উন্নত সময় এখন। শীতের আগমনে ঠাকুরগাঁও শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (বড় মাঠ)’র উত্তর পার্শ্বে রাস্তার পাশের ফুটপাতে বসেছে গরম কাপড়ের দোকানপাঠ। এ সকল দোকানে বিভিন্ন শ্রেনীপেশার লোকজন ভীড় করছে পছন্দমত গরম কাপড় কেনার জন্য। বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভীড় লক্ষ্যনীয়। পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন স্থানেও গরম কাপড়ের দোকান বসছে। তবে পুনাক শিল্প ও পন্য মেলা বসায় ঠাকুরগাঁও রোড যুব সংসদ মাঠে এখনও সেই রকম ভাবে গরম কাপড়ের মার্কেট বসতে দেখা যায়নি। ঠাকুরগাঁও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক (আশ্রমপাড়ায়) হর্কাস মার্কেট থাকলেও তা এখনও জমে উঠেনি। শহরের ব্যস্ততম রাস্তা ওই স্থানে হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়িরা মার্কেট জমিয়ে তুলতে পারছে না। তাই লোক সমাগম বেশি থাকায় সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (বড় মাঠ)’র উত্তর পার্শ্বে রাস্তার পাশের ফুটপাতে অস্থায়ী ভিত্তিতে মৌসুমী গরম কাপড় ব্যবসায়িরা তাদের দোকান নিয়ে বসেছেন। প্রতিদিন গড়ে বেচা কেনাও হয় প্রচুর। তবে তাদের মতে এখন কেবল শীত পড়া শুরু হয়েছে; শীত যতই বাড়বে ততই তাদের দোকানের বেচা কেনা বাড়বে। এখানে বিভিন্ন বয়সী মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নানা ধরনের গরম কাপড় পাওয়া যাবে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বয়সীদের শোয়েটার, টুপি, মাফলার, প্যান্ট, সার্ট, গেঞ্জি, কোট, উলের তৈরী কাপড়, জ্যাকেট ইত্যাদি। তবে বিশেষ করে এ বছর বাচ্চাদের বিভিন্ন রকমের শীতের কাপড়-চোপড় বের হয়েছে বেশি। বাচ্চাদের কাপড়ের অনেক বেশি চাহিদাও রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। শহরের বাসষ্ট্যান্ড, সত্যপীর ব্রীজ, ঠাকুরগাঁও রোড, সালন্দর হাট, পাশাপাশি জেলার শিবগঞ্জ, খোচাবাড়ী, রুহিয়া, রামনাথ, গড়েয়া, কালমেঘ, যাদুরানী, ফাড়াবাড়ি, বেগুনবাড়ী, লাহিড়ীসহ বিভিন্ন হাটবাজারেও মৌসুমী ব্যবসায়িরা গরম কাপড় বিক্রি শুরু করছেন। এখানে হাটের নির্ধারিত দিন তারা গরম কাপড় বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ছোট খাটো বাজারেও শীতের গরম কাপড় বিক্রি করতে দেখা যায়। এখানে শীত বাড়ার সাথে সাথে মৌসুমি শিতের গরম কাপড় ব্যবসায়িদের বেচাকেনাও বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের।
সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠের উত্তর পাশের অস্থায়ী মৌসুমী গরম কাপড়ের মার্কেটে আসা ক্রেতা পৌর শহরের হাজীপাড়া মহল্লার গৃহিনী রুমি আক্তার জানান, প্রতি বছর তিনি এই অস্থায়ী মার্কেটে আসেন গরম কাপড় কেনার জন্য। তিনি তার ৫ বছরের ছেলে সন্তানের জন্য কাপড় কিনতে এসেছেন। তিনি জানান, এখানে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় স্বল্প মূল্যে কিনতে পারেন বলে জানান তিনি। বালিয়াডাঙ্গী থেকে আসা রজব আলী জানান, তিনি এখানে জ্যাকেট কিনতে এসেছেন। গত বছর ভাল মানের জ্যাকেট কম দামেই তিনি এই মার্কেট থেকে কিনেছিলেন। এবছরও ভাল জ্যাকেটের সন্ধানে তিনি এসেছেন। তবে মার্কেট এখনও তেমন ভাবে লাগেনি বলে পরে আবার আসবেন বলে জানান তিনি।
গরম কাপড় ব্যবসায়ি আব্দুল বলেন, প্রতি বছর তারা মৌসুমি এ শীতের গরম কাপড়ের দোকান দিয়ে থাকেন। এখানে ৩০-৪০ টি দোকান বসেছে। এখানে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৩-৪ হাজার টাকারও কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়। এখানে শীতের প্রকোপ শুরু হওয়ায় বেচাকেনাও হচ্ছে ভাল। তবে তিনি জানান, শীত যত বাড়বে বেচাকেনাও তত বাড়বে।