হেলাল হোসেন কবিরঃ লালমনিরহাট জেলা সদরের মহেন্দ্রনগরে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকাল লালমনিরহাট মিশন মোড় সংলগ্ন পৌর বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে লেখিত বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান বাবলা।
বক্তব্যে বলেন গত ১১ ফেব্রুয়ারী শনিবার কেন্দ্রীয় ঘোষিত বিএনপির লালমনিরহাট সদর উপজেলার সকল ইউনিয়নে গণ পদযাত্রা কর্মসূচী পালিত হয়। মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে কর্মসূচী পালন করার প্রস্তুতি গ্রহণের প্রাক্কালে শান্তি সমাবেশের নাম করে আওয়ামীলীগ পুলিশের নাকের ডগায় বিএনপি’র কর্মসূচীতে বর্বরোচিত হামলা চালায়।
ঘটনা তুলে ধরে বলেন আওয়ামীলীগ-এর শান্তি সমাবেশ হারাটি বন্দরে মঞ্চ করে অনুষ্টিত হওয়ার কথা, অথচ বুড়ির বাজারে সশস্ত্র মিছিল নিয়ে আশা ছিল তাদের পূর্ব পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
তদের কর্মসূচির নামে তারা সমাবেশ না করে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য শান্তি প্রিয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর সশস্ত্র আক্রমন চালায়। এই সশস্ত্র মিছিলে যোগ দেয় লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। সেখানে সম্পন্ন অবস্থায় শতাধিক মটর সাইকেলে লালমনিরহাটের আলোচিত একটি সন্ত্রাসী গ্রুপও যোগ দেয়।
পুলিশের উদ্দেশ্য বলেন পুলিশ সুপার এবং পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি অফিস ভাংচুর এবং ব্যাপক লুটতরাজ করে, যা ভিডিও ফুটেজে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়। ঘটনাস্থলে অবস্থিত পুলিশ বাহীনির সদস্যরা নীরব ভূমিকা পালন করে। যার ফলে পরবর্তীতে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব আব্দুল মজিদ মন্ডল-এর বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (রামদা, বেকি, ক্রিচ) নিয়ে মারাত্মকভাবে ভাংচুর করে এবং ব্যাপক লুটপাট করে ও তার বাড়িতে অবস্থিত ১২/১৩ টি মটর সাইকেল ভাংচুর করে যার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
আরও বলেন মজিদ মন্ডলের বাড়ী ভাংচুর করে ফেরার পথে হোসেন মেকার, শহিদুল কাজী মজিদুল রহিম ও মোশারফকে চরম ভাবে মারপিট করে এবং দোকানপাট লুট ও অগ্নিসংযোগ করে ।
উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কয়েকটি মামলা হয়, তার একটি মামলার বাদী রাকিব হাসান । সে তার দাখিলকৃত মামলায় যে গরু চুরির কথা বলেছে, সেই গরু তারই শ্বশুর মোফাজ্জলের বাড়ী কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের প্রভাব মৌজা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে, যা এখন লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
সেদিনের ঘটনার অপর একটি মামলার বাদী সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এনামুল। বুড়ির বাজারে তার কোনো দোকান নেই। অথচ সে এজাহারে দোকানপাট লুট ও অগ্নিসংযোগের কথা বলে । কোনো দোকানদার এ ব্যাপারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে কোনো অভিযোগ করে নাই। এতেই প্রমাণিত হয় অভিযোগটি ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।
আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন সেদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দলের দায়িত্বশীল পদে থাকা একাধিক নেতা ও ভোট চোরের এমপি বিএনপি’র লোকজনকে দেখা মাত্র শেষ করে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এ থেকে প্রমাণিত হয় আওয়ামীলীগ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এ ঘটনাটি বিশ্লেষণ করলে এটা প্রমানিত হয় যে, বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ গণ পদযাত্রা কর্মসূচীকে বিতর্কিত করার জন্য আওয়ামীলীগ পরিকল্পিতভাবে একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।
পরিকল্পিত এই ঘটনার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারগণের প্রতি সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করে লালমনিরহাট জেলা বিএনপি এবং এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করা হয়।
এসময় জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এ্যাড. রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক একে এম মমিনুর হক, ফারুক সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবজাল হোসেনসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।