এম এ হানিফ রানা,স্টাফ রিপোর্টারঃ গুঞ্জন অবশেষে সত্যিতে রুপ নিলো। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্হায়ী ভাবে বহিষ্কার করা হলো।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করা এবং দলের বাহিরে গিয়ে নির্বাচন করা ভালো ভাবে নেননি আওয়ামী লীগ। তাই গাজীপুরের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া স্বাক্ষতি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত রোববার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমন্ডলীর সভায় জাহাঙ্গীর আলমকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করার সুপারিশ করা হয়। তার এক দিন পরেই তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হলো। আওয়ামী লীগের ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আওয়ামী লীগ-এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম-কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
প্রসংগত, আগামী ২৫ মে হতে যাওয়া গাজীপুরের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয় আওয়ামিলীগ নেতা আজমত উল্লাহ খানকে। মনোনয়ন পাননি জাহাঙ্গীর আলম। তাই মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজে সতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে তিনি নিজের সাথে নিজের মা জায়েদা খাতুনকেও প্রার্থী করেন। ঋণখেলাপি হওয়ার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। কিন্তু হাইকোর্টেও তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। ফলে এখন মায়ের নির্বাচনি প্রচারণায় নেমেছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ঘরোয়া আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়। পরে চলতি বছরের জানুয়ারীতে ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমা করার কথা জানিয়ে চিঠি দেয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেই চিঠি দেওয়ার চার মাস না পেরোতেই তিনি দলীয় কোন সিদ্ধান্ত মানছিলেন না বলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা গণমাধ্যমে অভিযোগ করে আসেছিলেন।
গত রোববার জাহাঙ্গীরের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে আলোচনা হয়। সেখানে তার স্থায়ী বহিস্কারে বিষয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলী একমত হন। তখন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান। তার একদিন পরই তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হলো।