স্বপন কুমার রায়,খুলনাঃ নেতাকর্মীদের জায়গা দিয়ে ত্যাগী নেতাদের দূরে রাখা, ব্যক্তিগত জীবনে বিশৃঙ্খল ও বিভিন্ন মানুষের ওপর হামলার অভিযোগ আছে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনুর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও তার দূরত্ব রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়া নেত্রকোনার দুইজন এমপি, সুনামগঞ্জের একজন, মাদারীপুরের একজন, চাঁদপুরের একজন, লক্ষ্মীপুরের একজন, ময়মনসিংহের একজন, যশোরের একজন, রংপুরের একজন এমপিসহ পঞ্চাশের অধিক এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়াও দলে পদবাণিজ্যসহ অভিযোগের স্তূপ জমা পড়েছে দলের শীর্ষপর্যায়ে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব এমপি অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে দলের রেড তালিকায় নাম উঠিয়েছেন। তাদের বিষয়ে দল এবার কোনোরকম ছাড় দেবে না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রায় অর্ধেক আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে। দলের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলে দিয়েছিলেন যে ১০০টি আসনে প্রার্থীর কথা তিনি ভেবে রেখেছেন। গত ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় দলীয় এমপিদের জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। জনবিচ্ছিন্ন সংসদ সদস্যরা আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না বলেও তিনি সতর্ক করেছিলেন।
গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দলের বর্তমান কমিটির প্রথম সভাপতিম-লীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর গত ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে ৮ বিভাগের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক টিমের নেতারা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার হাতে দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। সভাপতিম-লীর বৈঠকে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনা নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমার কাছে অনেকেরই আমলনামা রয়েছে। আপনারাও খোঁজখবর নেন, আমাদের যারা এমপি রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে কোথায় কী দোষত্রুটি এবং দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে। কারণ আগামী নির্বাচন চ্যালিজিং ইস্যু। বিতর্কিত কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, সভাপতি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গাজীপুর ও বরিশালে বর্তমান মেয়রদের বাদ দিয়ে নতুন দুই মুখকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তারা বলছেন, বরিশালের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ (শেখ হাসিনার ভাতিজা) এবং গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দলের বদনাম করায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। সিটি নির্বাচনের মনোনয়নের মাধ্যমে দলের সভাপতি মূলত কারও মনোনয়নই যে নিশ্চিত নয় এই বার্তা দিতে চেয়েছেন।
আগামী নির্বাচন কেমন হবে এবং দল কেমন প্রার্থী দেবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কামরুল ইসলাম দৈনিক আলোচিত কন্ঠকে বলেন, ‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালে বিএনপি এক আসনে একাধিক প্রার্থীর নিকট থেকে টাকা নিয়ে বিএনপি একটা হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি করে। ফলে সম্মানজনক হারা থেকেও বঞ্চিত হয়। এবার বিএনপি যত কথাই বলুক, তারা নির্বাচনে আসবে। ফলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তিনি বলেন, যার এলাকায় সুনাম রয়েছে, জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত, দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে- তারাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন।