মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ ঠাকুরগাঁও জেলার পুনর্জন্ম মাদকাসক্তি চিকিৎসা,সেবা ও পরামর্শ কেন্দ্র পরিদর্শণ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবুর রহমান। ৬ আগষ্ট সোমবার সকালে শহরের গোয়াল পাড়ায় অবস্থিত মাদকাষক্ত নিরাময় কেন্দ্র পরিদর্শণ কালে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মণ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সৌমিক রায়, নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক হাসান কবীর শিহাব, মেডিকেল অফিসার ডা: মোস্তাক ফিরোজ, জেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি মাহাবুবুর রহমান খোকন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা তুলি, প্রমূখ। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ৩২ জন মাদকাশক্ত চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের ১৭ তারিখে শহরের পশ্চিম গোয়ালপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে পথযাত্রা শুরুকরে মাদকাসক্তি চিকিৎসা, সেবা ও পরামর্শ কেন্দ্র ‘পুনর্জন্ম’। ঠাকুরগাঁও জেলার তরুণ কম্পিউটার প্রকৌশলী হাসান কবির শিহাব এর উদ্যোক্তা। এখানে ৩২জন মাদকাসক্ত তরুণ ভর্তি আছেন। এদের বয়স ১৫ থেকে ২৫ এর মধ্যে। প্রায় সবাই স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ৫ জন স্টাফ আর ৩ জন চিকিৎসক প্রয়োজন অনুসারে কাজ করেন এখানে।
এছাড়াও মুলত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠা তরুণরাই কাজ করে থাকেন। তাদের ভাষায় এটা হচ্ছে ফেলোশিপ জার্নি। এদের অনেকের সাথেই কথা বলে দেখা গেছে সবাই সপ্রতিভ এবং বুদ্ধিদীপ্ত। প্রায় সবাই একবাক্যে স্বীকার করলেন যে তারা তাদের অতীত কর্মকান্ডে অনুতপ্ত। এখান থেকে বের হয়ে স্বাভাবিক জীবনে তারা ফিরতে চান বলেও তারা জানান। ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রের পরিচালক শিহাব বলেন “এখান থেকে অনেকেই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গেছেন”। তিনি এ কেন্দ্রটির কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন “এখানে অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দ্বারা চিকিৎসা, কাউন্সিলিং, ডিটক্সিফিকেশন, থেরাপিউটিক্যাল কমিউনিটি, সাইকো-এডুকেশন, অকুপেশনাল থেরাপি, রিক্রিয়েশনাল থেরাপি, আফটার কেয়ার ফলো-আপ সেবাগুলো দেয়া হয়ে থাকে। খরচ সম্পর্কে জানতে চাইলে শিহাব বলেন ঢাকা বা বড় শহরগুলোর এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেক খরচ দিতে হলেও আমরা সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যেই খরচের অংকটা রেখেছি। এখানে একজন নিবাসীর পেছনে মাসিক খরচ ২ হাজার হতে ৫ হাজারের মধ্যে। এ টাকার মধ্যে থাকা খাওয়া চিকিৎসাসহ আনুসাঙ্গিক খরচ নির্বাহ করা হয়। শিহাব বলেন, যদি আমরা সামান্য পরিমাণে হলেও সরকারি সাহায্য পেতাম তবে আরো সুন্দরভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হতাম। বর্তমানে নিরাময় কেন্দ্রটি সরকারী নিবন্ধন প্রাপ্ত।
এ ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও এর সহকারী পরিচালক সৌমিক রায় বলেন, পুনর্জন্ম মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অনুমোদিত জেলার প্রথম বেসরকারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র। এখানে এলাকার মানুষ চিকিৎসা নিয়ে উপকৃত হচ্ছেন। সরকারীভাবে পৃষ্ঠপোষকতার তেমন কোন সুযোগ থাকলেও, অধিদপ্তরে আবেদনের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগিতা পেতে পারে। ঠাকুরগাঁও
জেলা প্রশাসক মো: মাহবুবুর রহমান চিকিৎসা গ্রহনকারী মাদকাসক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা কম বেশি সবাই মেধাবী শিক্ষার্থীর । বিভিন্ন কারনে মাদকাসক্ত হয়েছো। এখান থেকে নিরাময় শেষে বাড়ি ফিরে গিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে। লেখাপড়া শেষে কর্মজীবনে ফিরে যাবে। আর কোন দিন মাদকাসক্তের দিকে ঝুকা যাবে না। পুনর্জন্ম পরিচালকের উদ্দেশ্যে বলেন ভর্তি যুবকদের আরও বেশি করে পরিচর্যা করে সুস্থ করে তোলার পরামর্শ দেন।