মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরাঃ আশ্রয়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার এই প্রতিপাদকে সামনে রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে চলমান কর্মসূচির চতুর্থ পর্যায়ে (২য়) ধাপে সাতক্ষীরাসহ সারাদেশে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ আগস্ট) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে যুক্ত থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে জমির মালিকানাসহ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সরাসরি তদারকি, ভূিম মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে ৯ আগস্ট সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক ভাবে সারাদেশের ন্যায় সাতক্ষীরা জেলায় ৬০৫টি পরিবারকে ২শতাংশ জমিসহ ঘর ও ঘরের চাবি হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে সাতক্ষীরা প্রান্তে সদর উপজেলা মিলনায়তনে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোহরা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার উপকারভোগীদের হাতে ঘরের চাবি, জমির দলিলসহ অন্যান্য কাগজপত্র তুলে দেন এবং বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর-২আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতিকুল ইসলাম, সদর সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুমনা আইরিন, সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ইয়ারুল হক, দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর বিন সেলিম যাদু, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.মনির হোসেন, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল গনি, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য সহকারি প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রশিদ, ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান, বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. মফিজুর রহমান, শিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম আবুল কালাম, বৈকারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখ। উল্লেখ্য যে, দেশের আরও ১২টি জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে জমিসহ ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। এসময় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ২২ হাজার ১০১টি বাড়ির দলিল হস্তান্তর করেছেন। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪১টি জেলার আরও ১২৩টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীন ঘোষণা করা হলো।
সাতক্ষীরায় মুজিববর্ষের ৪র্থ ধাপে (২য়) পর্যায়ে বাসগৃহ পাচ্ছেন ৬০৫টি ভূমিহীণ ও গৃহহীন পরিবার। ইতোমধ্যে ৩ হাজার ২২৭ টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলায় ৩৪২৮ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নির্বাচন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ম পর্যায়ে ১১৪৮ টি, ২য় পর্যায়ে ৬৬৫টি, ৩য় পর্যায়ে ৮০৯টি এবং ৪র্থ পর্যায়ে ৬০৫টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৪র্থ ধাপের ৬০৫টি ঘরের মধ্যে ৩৮৬টি ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকী ২১৯ ঘর নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জেলার তালা উপজেলায় ৩১০টি, কলারোয়া উপজেলায় ৩৭৫টি, দেবহাটা উপজেলায় ১৬২টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ৫৪৯টি ভূমিহীণ ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করে ইতোমধ্যে উক্ত উপজেলাসমূহকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায় পর্যন্ত সদর উপজেলায় মোট ৫৬৪টি ও কালিগঞ্জ উপজেলায় ৩৭১টি পরিবারকে পুনর্বাসন করে এ দুটি উপজেলাকেও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষনা করার প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। সদর উপজেলায় চতুর্থ পর্যায়ে (২য়) ধাপে ৪০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মাঝে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। এসময় প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, উপকারভোগীসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শেখ সহিদুর রহমান।