নরসিংদীতে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টিকারী পোস্টের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন

নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কুমার সাহার ফেসবুক পোস্টে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক লেখার প্রতিবাদে নরসিংদী রিপোর্টার্স ক্লাবের হল রুমে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে হিন্দু খ্রিস্টান বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তারা বলেন ‘আমরা বাংলাদেশী হিন্দু- মুসলিম হাজার বছরের সম্প্রীতির ঐতিহ্য লালন করে আসছি। আমরা যে কোন আঞ্চলিক ও জাতীয় দুর্যোগে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হিন্দু-মুসলিম একসাথে কাজ করে আসছি। তার নমুনা আপনাদের সামনে উজ্জ্বল্যমান। এই ২০২৪ সালে আপনারা দেখেছেন বানভাসি মানুষের জন্য হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ একসাথে মিলে আমরা কাজ করেছি , আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছি। স্বাধীনতার ৫৪ বছরের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেনি। ২০২৪ এর ৫ ই আগস্টের পর যখন স্বৈরাচারের পতন ঘটে তখন সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে ও বাংলাদেশি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর কোন ধরণের আচঁ যাতে না আসে এর জন্য এ দেশের মুসলিমরা রাত জেগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়-মন্দির, গির্জা পাহারা দিয়েছে। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. ইউনুস ঢাকেশ্বরী মন্দিরের একটি সভায় স্পষ্টভাবে বলেছেন “আপনারা হিন্দু হিসেবে নয়, এদেশের একজন বৈধ নাগরিক হিসেবে আপনাদের অধিকার চাইবেন; ধর্মীয় পরিচয় অবশ্যই আছে কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে আপনার অধিকার চাওয়ার বৈধতা রয়েছে। “ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকের বদৌলতে নরসিংদী জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক কথিত সুব্রত কুমার দাস তার একটি ফেসবুক পোস্টে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায সুষ্ঠুভাবে পালন হবে কিনা তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন। তার এই লেখায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ইঙ্গিত বহণ করে।নরসিংদী জেলার সুদীর্ঘকালের ইতিহাস হিন্দু-মুসলিম এর সম্প্রীতির বন্ধন ভাঙ্গণ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত সুব্রত কুমার দাসের পদত্যাগের জোর দাবি করছি। এই সুব্রত কুমার দাস বিগত ১৭/০৮/২০২৪ইং তারিখে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ফাসিস্ট হাসিনা সরকারকে সন্তুষ্ট করতে একটি হত্যাকাণ্ডও সংগঠিত করে। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার রুজু হয়েছে। তার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একজন কোমলমতি ছাত্র হত্যাকারী ও হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে উস্কানিমূলক পোস্টদাতার নরসিংদী পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কোন অধিকার নেই। আসন্ন শারদীয় দুর্গা পূজায় তার এই ফেসবুক পোস্ট সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। একজন খুনি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী সুব্রত কুমার সাহাকে অবিলম্বে নরসিংদী পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক। অন্যথায় আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা হবে যেমনটি ইতিপূর্বে হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ও হবে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন হিন্দু খ্রিস্টান বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট নরসিংদী জেলার সমন্বয়ক দিপক কুমার বর্মণ প্রিন্স। আরও উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী এড. তুষার মিত্র, সজিব পাল ঝুমন, আশিষ, রানা সাহা সহ আরও অনেক।