আসাদুজ্জামান খান লিপন , কিশোরগঞ্জপ্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের কুমরী গ্রামের নূর হোসাইনী আলিম মাদ্রাসার ৪ জন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরিক্ষা কেন্দ্র দখল করে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদের স্হানীয় অযোগ্য প্রার্থী মোঃ তৌকির গং এবং আবুল কাশেম গং সন্ত্রাসী কায়দায় পরীক্ষা কেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করে পরীক্ষকদের জিম্মি করে শুক্রবার (১৭ ই ডিসেম্বর) রাত সাড়ে বারোটার দিকে তাদের নামের ফলাফল ও মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে এলাকাবাসী ও চাকুরী প্রার্থীরা নিয়োগ বন্ধসহ স্বচ্ছ নিয়োগে সহযোগিতা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে গত রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গেল আগস্ট মাসের ৩০ তারিখে দুইটি জাতীয় দৈনিকে নূর হোসাইনী আলিম মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে ১ জন, অফিস সহকারী পদে ১ জন, নিরাপত্তাকর্মী পদে ১ জন এবং আয়া পদে ১ জন লোকবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। চারটি পদের বিপরীতে যাচাই বাছাই করে ৬৫ জন প্রার্থীদের কে শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ২ঃ৩০ মিনিটে মাদরাসা অফিস কক্ষে নির্বাচনী পরীক্ষায় উপস্থিত থাকার জন্য প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়েছিল।
পাকুন্দিয়া উপজেলার কুমরী গ্রামের মোঃ মিজানুর রহমান অফিস সহকারী কাম-হিসাব সহকারী পদে নির্বাচনী পরীক্ষার অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশপত্র পেয়েছিলেন ১১ ডিসেম্বর। তাঁর অভিযোগ, দুপুর আড়াইটা পরিক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও পরিক্ষা হয় বিকেলে, সুন্দর ভাবে পরিক্ষা হচ্ছিল সন্ধ্যার স্হানীয় অযোগ্য প্রার্থী মোঃ তৌকির গং এবং আবুল কাশেম গং সন্ত্রাসী কায়দায় পরিক্ষা কেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করে পরিক্ষকদের জিম্মি করে বৃহস্পতিবার (১৭ ই ডিসেম্বর) রাত সাড়ে বারোটার দিকে তাদের নামের ফলাফল ও মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষর নিয়ে নেয়। এ বিষয়টি এলাকাবাসী ও অন্যান্য প্রার্থীরা সকলেই জানে। আমরা স্বচ্ছ ও মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছি।
শারীরিক প্রতিবন্ধিতা হাসিনা বেগম এক প্রার্থী জানান, মেধা, যোগ্যতা ও কোঠা থাকার সত্বেও আমরা মেধাবীরা স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি পাচ্ছে না। অযোগ্য প্রার্থীরা পরীক্ষকদের জিম্মি করে নিয়োগ নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যহত করছে। আমরা এসব বন্ধের দাবিসহ স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার লক্ষে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এটি বিষয়টি আমাদের গ্রামসহ এলাকায় এখন ওপেন সিক্রেট। নিয়োগ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হোক সেটাই প্রত্যাশা করছি।
শনিবার সকালে সরেজমিন গিয়ে নূর হোসাইনী আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আজিজুল হককে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির হোসেনের বাড়িতে গেলে এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে চলে যান।
এবিষয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য স্হানীয় সাংসদ প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নূরুল ইসলাম জানান, আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে পরীক্ষা কেন্দ্র জোরপূর্বক দখল করে যে যার মতো সাক্ষর নিয়ে নেয়।
নিয়োগ কমিটির সদস্য, পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাব উদ্দিনে মুঠোফোনে জানান, আমি যতক্ষণ ছিলাম ততক্ষণ কোন সমস্যা হয়নি। আমি আসার পর হাঙ্গামা হয়েছে শুনেছি।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী বিষয়টির খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।