সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম—————-
নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার দুইদিন পর ভোট কেন্দ্রে অবস্থিত টয়লেট থেকে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর ) সকালে বেশকিছু ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনায় এলাকার ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এদিকে ব্যালট উদ্ধারের খবর ধামশ্রেনী ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মাঝে পৌছুলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের কয়েক হাজার সাধারণ ভোটার নিয়ে একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী উলিপুর উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করে l
এ সময় অবশ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল কুমার তার কার্যালয়ে ছিলেন না বলে জানা গেছে। পরে বিক্ষোভকারীরা অফিস চত্বরের সামনে এক সমাবেশে মিলিত হন।
অভিযোগকারী প্রার্থীগণ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ দায়িত্ব পালনে অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার তার লোকজনদের নিয়ে অর্থের বিনিময়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে জিতিয়ে দেন। তাদের দুর্নীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত ব্যালট পেপার নির্বাচনের দুই দিন পর ইউনিয়নের যেখানে-সেখানে পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় তারা অবিলম্বে ২৬ শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ধামশ্রেণী ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান। এসময় কয়েক হাজার ভোটারকে বিক্ষোভ সমাবেশে শ্লোগান দিয়ে নির্বাচন বাতিলের দাবি জানাতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পরাজিত আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ সিরাজুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ রাকিবুল ইসলাম সর্দার, মফিজুল হক (জর্দা), আবু বক্কর সিদ্দিক, জাতীয় পার্টির প্রার্থী একরামুল হক মানিক প্রমূখ l
বক্তারা ধামশ্রেনী ইউনিয়নের নির্বাচন পুনরায় অনুষ্ঠিত না হলে উলিপুরের সকল কর্মকান্ড স্থবির করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়।
এ সময় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা প্রার্থীসহ অন্যান্য পরাজিত সদস্য প্রার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন l
উল্লেখ্য ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার ৩’দিন পর আজ বুধবার সকালে, ভদ্র পাড়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের টয়লেটে কিছু পোড়া এবং কিছু ভালো ব্যালট পেপার জনৈক ব্যক্তি দেখতে পান। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে সেখান থেকে বেশকিছু ভালো ব্যালট পেপার উদ্ধার করে স্থানীয় জনতা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ভোটের দিন দুপুর দুইটার পর থেকে কোন ব্যালট পেপার সরবরাহ করেননি। এ কারণে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এসব ব্যালট পেপার কোত্থেকে এই কেন্দ্রে আনা হয়েছিল।
অভিযোগ উঠেছে, অনেক ভোটার ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে এসে ভোট না থাকায় ফিরে গেছে। তারা অভিযোগ করে বলছেন,তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার জাল ব্যালট পেপারের মাধ্যমে প্রয়োগ করে এখানে অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে।
টয়লেট থেকে ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনাই প্রমাণ করে এই কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ওই ইউনিয়নের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম জানান, তার বিরুদ্ধে এটি একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। নির্বাচন-অনুষ্ঠানের পর বাথরুম যথারীতি ব্যবহার করলেও কেউ সেখানে জাল ব্যালট পায়নি, হঠাৎ করে তিনদিন পর কে বা কারা সেখানে ব্যালট পেপার রেখে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে মাত্র।