মোঃ মজিবর রহমান শেখঃ শখের বশে লাগানো থাই ‘ব্যানানা ম্যাংগো’ বাগানে এখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন হচ্ছে আম। এরই মধ্যে আম বিক্রয় শুরু হয়েছে বাগান থেকে। এবার প্রায় ২৫ লাখ টাকার আম বিক্রয় করার আশা ব্যক্ত করেছেন বাগানের মালিক আমিনুল ইসলাম। শখের বশে লাগানো আম বাগান করে যেমন সফল হয়েছেন তিনি তেমনি কর্মসংস্থান হয়েছে ২০/২৫ জন মানুষের।
ঠাকুরগাও শহরের হাজিপাড়া শিমুলতলা এলাকার আমিনুল ইসলামের বাড়ি । ২০২০ সালে শখের বসেই আমিনুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা দেবীপুর ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া খলিশাকুড়ি গ্রামে আমের বাগান করেন। পরের বছরে আমের ফলন ভালো হওয়ায় বাগানের আশেপাশের জমি লিজ নিয়ে বাগান আরও বড় করেন। এখন ৫০ শতক জমির ওপর থাই ব্যানানা ম্যাংগো বাগান আমিনুলের। তার বাগানে ২ হাজার ৩শত আম গাছ রয়েছে তার মধ্যে থাই ব্যানানা ম্যাংগো গাছই বেশি। এছাড়া, সূর্য ডিম, আম্রপালী ও বারি ৪ জাতের আম গাছও রয়েছে। ২০২২ সালে তার বাগান থেকে প্রায় ২২ লাখ টাকার আম বিক্রয় করেন তিনি। এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় ২৫ লাখ টাকার আম বিক্রয়ের আশা করেন বাগানের মালিক আমিনুল। আম বাগানে কাজ করা কর্মচারি হাফিজুল ইসলাম বলেন, অনেক বড় বাগান আমরা ১৫/২০ জন গাছ পরিচর্যা সহ আম তোলা ও ক্যারেটে সাজানোর কাজ করে থাকি। আর ৫ জন বাগানে পাহাড়া দেয়। আমরা মাসিক বেতন হিসেবে এখানে কাজ করতেছি। এই বেতন দিয়ে আমাদের সংসার খুব ভালো ভাবে চলে। বাগানের ম্যানেজার মেহেদী হাসান লাবু বলেন, আমাদের বাগান থেকেই ব্যানানা ম্যাংগো বিক্রয় হয়। এই আমের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও আমরা রাজধানীতে এই আম বিক্রয় করে থাকি। এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে, আমের সাইজও ভালো। আশা করছি এবার আম বিক্রয় করে লাভবান হওয়া সম্ভব। থাই ব্যানানা ম্যাংগো বাগানের মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রথমে নিজের জমিতে শখের বসেই আম বাগান করি। পরে দেখি আম বিক্রয় করে ভালোই লাভবান হচ্ছি এবং সেই সঙ্গে অনেকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। পরে আশেপাশের জমি লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে আম চাষ শুরু করি। গত বছর থাই ব্যানানা ম্যাংগো প্রায় ২২ লাখ টাকার বিক্রয় করেছি। এ বছর যে আম রয়েছে তাতে ধারণা করছি প্রায় ২৫ লাখ টাকার আম বিক্রয় করতে পারবো। কৃষি অফিসও আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। কিভাবে আম গাছ ও আমের যত্ন নিতে হবে তারা এসে পরামর্শ দিত। তবে তারা আরও সহযোগিতা করলে আমি আরও বড় পরিসরে আম বাগান করার আশা করি।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, থাই ব্যানানা একটি বিদেশি আম। এই আমের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমিনুল ইসলামের বাগানে আমাদের মাঠ কর্মীরা নিয়মিত পরিদর্শন করে ও পরামর্শ দেয়। এবার তার বাগানের কিছু আম প্যাকেটিং করা হয়েছে। এই আম আমরা বিদেশে রফতানির আশা করছি। এভাবে কৃষিতে সকলে এগিয়ে আসলে আমাদের জেলা ও দেশের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারবো আমরা।