নোমান পারভেজ, ধামরাই- প্রতিনিধিঃ
১৯৭১-এর ১৫ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাইয়ের বাথুলিতে সম্মুখ সমরে শহীদ হয়েছিলেন বীর যোদ্ধা আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন)। বিজয়ের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও অজানাই রয়ে গেছিলেন তিনি। তবে এবার প্রথমবারের মতো এই শহীদের স্মরণে আয়োজন করা হয় স্মরণসভা। সেখানে আব্দুল ওহাবের বীরত্বগাঁথা তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধারা।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বাথুলি গ্রামে আব্দুল ওহাবের (শফি উদ্দিন) স্মরণ সভা আয়োজন করে স্থানীয় তরুণ প্রজন্ম।
সভায় সাবেক ছাত্র নেতা আরিফুল ইসলাম সাব্বিরের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সুতিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা মিয়া। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাথুলি যুদ্ধের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাহারুল ইসলাম আরজু।
সভায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী মাস্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কৃষ্ণপুর (মানিকগঞ্জ) ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ, বর্তমান চেয়ারম্যান বিপ্লব হোসেন সেলিম, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য আব্দুল হালিম, ধামরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রবিউল আওয়াল রুবেল, ঢাকা জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান হাসান প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘১৯৭১-এর মার্চে ছুটিতে এসেছিলেন ইপিআরের কর্মকর্তা শফি উদ্দিন। পরে মুক্তিযুদ্ধের ডাক আসলে মানিকগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন তিনি। মানিকগঞ্জের কমান্ডার আব্দুল হালিম নতুন নাম দেন শফি উদ্দিনকে। তখন থেকেই আব্দুল ওহাব নামে পরিচিতি পান শফি উদ্দিন। এরপর টানা ৯ মাস মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ও সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন।
‘১৯৭১-এর ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদাররা যখন পালিয়ে যাচ্ছিলো তাদেরকে ধাওয়া দেয় মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বাহিনী। বাথুলিতে বাজারের পশ্চিম পাশে পাক হানাদারদের ওপর গুলি ছুঁড়লে তাদের পাল্টা গুলিতে আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) শহীদ হন। পরে তাকে কৃষ্ণপুর বাহিরারচর এলাকায় দাফন করা হয়।’
মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের দলটি মানিকগঞ্জের হওয়ায় ধামরাইয়ে শহীদ হওয়া আব্দুল ওহাব স্মরণে এখানে এসে সেভাবে কোন আয়োজনই করা হয়নি। তবে এই ৫০ বছর পর তরুণ প্রজন্ম যেভাবে সব আয়োজন করেছে তাতে আমরা আশা করছি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন) সম্পর্কে আবারো সবাই জানতে পারবে।
এ সময় তারা বাথুলির সড়কটির নাম শহীদ আব্দুল ওহাব (শফি উদ্দিন)-এর নামে নামকরণ ও তার স্মৃতি স্মরণে ফলক করে দেয়ার দাবি জানান।