এম এ হানিফ রানা,, স্টাফ রিপোর্টার
ধোলা বালি আর যানজটের শহর থেকে মানুষ একটু বিনোদন আর পরিবার পরিজন সহ একান্তে আনন্দময় সময় কাটাতে যায় কক্সবাজার। শুধু দেশ থেকে নয় অনেক বিদেশি রাস্ট্র থেকেও মানুষজন আসে আনন্দ উপভোগ করার জন্য। কিন্তু হোটেল মোটেল থেকে শুরু করে সাগর পাড়ের ক্যামেরা ম্যান, ওখান বিভিন্ন ধরনের সামগ্রির বাজারেরে গলা কাটা দাম সহ নানান নেশাখোরদের উৎপাত এবং মাঝে মাঝে পর্যটকদের সর্ব শান্ত করা সহ নানান অপকর্মের সাক্ষী এই বিনোদন স্পটটা। আর এতে প্রশাসন ভাসমান প্রদক্ষেপ নিলেও সেটা গায়ে তেল মাখার মতোই অনেকটা। তাই কোন প্রতিকার তো হচ্ছেই না আরো বিপদে পরছে পর্যটকদের জীবন। এখানে আরো বড় দূর্নীতিবাজ হচ্ছে রিক্সার ড্রাইভাররা। নতুন পর্যটক দেখলেই জহুরির মতো কয়েক কিলো রাস্তা ঘুরে যেতে হবে বলে ১০ টাকার ভারা ২০০/৩০০ টাকাও নিয়ে থাকে। তাছরা রিক্সায় উঠা মাএই বলে আমার পরিচিত হোটেল আছে কম দামে ভালো সুবিধা পাবেন এই বলে পটিয়ে সেই হোটেলে নিয়ে যায় এবং মোটা অংকের পার্সেন্টেজ নিয়ে চলে যায়। যারা টায়াট বা চেয়ার ভাড়া দেয় ঘন্টা হারে সেখানেও উচ্চ মূল্য যেনো দেখার কেও নাই। তাছারা এমন আরো হয়রানির কথা লিখে শেষ করা যানে না। এখানে ঝুপ বুজে কুপ মারার আরো উদাহরণ হলো আলু ভর্তা ও এক প্লেট ভাত ৪০০ টাকা।
সম্প্রতি গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ, আবাসিক হোটেলের অস্বাভাবিক ভাড়া এবং রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবারের দাম নিয়ে নৈরাজ্যের প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসার ওপর। এখানে ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক পর্যট’কের দেখা মিলছে না। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, এ সময় প্রতি বছর পর্যটন এলাকার আবাসিক হোটেলগুলোর ৮০ থেকে ৯০ ভাগের বেশি রুমের বুকিং থাকে। কিন্তু এবার ৫০ ভাগের বেশি রুম খালি পড়ে আছে। বলতে গেলে চলতি পর্যটন মৌসুমে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পর্যট’ক নেই।
পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নুরুল আবছার জানান, বছরের শেষ দিন অর্থাৎ ‘থার্টিফার্স্ট নাইট’ উদ্যাপনেও এবার সেভাবে পর্যট’কের দেখা মেলেনি। কিন্তু অন্য সব বছর এমন সময় হোটেলে রুম পেতে পর্যট’কদের গলদঘর্ম হতে হতো। দেশে করো’না পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকার পরও ধ’র্ষণকা’ণ্ড ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর গলাকা’টা বাণিজ্যে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে।
কক্সবাজার পর্যটন গলফ মাঠের গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারাদার পৌর কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতু বলেন, ১৬-১৮ ডিসেম্বর ছুটির ৩ দিন এখানে পর্যট’কদের ৩৫০ বড় বাস পার্কিং করা হয়েছিল। এখানে পার্কিং করার জায়গা না পেয়ে ইলিয়াছ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে আরও আড়াইশ বড় বাস পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু পর্যটনের ভরা মৌসুমে কক্সবাজারে পর্যট’কদের ১০০টির মতো বড় বাস পার্কিং করা হয়। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
ইজারাদার সেতু আরও বলেন, গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধ’র্ষণ এবং রেস্টুরেন্টগুলোতে ডাল-ভাতের অস্বাভাবিক দামের খবর প্রচারিত হওয়ায় দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। এসব খবরে কক্সবাজার থেকে ভ্রমণপিপাসু পর্যট’করা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবুল কাশেম সিকদার বলেন, এবার আশানুরূপ পর্যট’ক আসেননি। থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে মাত্র ৫০ শতাংশের অধিক রুম বুকিং হয়েছে। এছাড়া সমুদ্রসৈকতে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারি নিষেধাজ্ঞাও পর্যট’ক ধসের আরেকটি কারণ। কক্সবাজারে এমন নাজুক অবস্থা আর কখনো হয়নি।
ট্যুরিস্ট পু’লিশের অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে ৪৫০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যট’কদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কক্সবাজারে আর যাতে কোনো নেতিবাচক ঘটনা না ঘটে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পু’লিশ।
জে’লা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজার নিয়ে প্রচারণায় কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পর্যট’কদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।
তবে এত কিছুর পরেও পর্যটকদের ভীতর নেতিবাচক যেই প্রভাব পরেছে সেটা দূর করতে এই সব দূর্নীতি রোধে ২৪ ঘন্টা সার্ভিস এবং হোটেল মোটেল ভাড়া সবসময় আয়ত্বে রাখা সহ কার্যকরী প্রদক্ষেপ নিতে হবে। নইলে এই বিশাল অর্থনৈতিক খাত ধ্বংশ হওয়া শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছারা আর কোন উপায় থাকবে না।